আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:০৩ এএম
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হবিগঞ্জে নদীভাঙন আতঙ্কে কয়েকশ পরিবার

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে নদীভাঙন ঝুঁকিতে স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে নদীভাঙন ঝুঁকিতে স্থানীয়রা। ছবি : কালবেলা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বিগত দেড় যুগে কালনী নদীর ভাঙনে ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে কয়েক শত পরিবার। ভাঙন থেকে বাদ পড়েনি রাস্তা, বাঁধ, মসজিদ, শ্মশান, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বর্তমানে উপজেলার বদলপুরের পিরোজপুরের প্রায় তিন শতাধিক পরিবার নদীভাঙনে নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারানোর শঙ্কায় দিন পার করছেন।

জানা গেছে, এর আগে নদীভাঙনে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর, মাহমুদপুর, নদীপুর, পাহাড়পুরের কয়েকশ’ পরিবার নিঃস্ব হয়েছেন।

বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা হারুন মিয়ার (৫৫) কৃষি কাজ করেই তার জীবিকা নির্বাহ করেন। এলাকায় সচ্চল কৃষক হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। প্রায় দেড় যুগ আগে কালনী নদীর ভাঙনে নিজের ১১২ শতাংশ বাড়িটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তার। শুধু বসতভিটাই নয় নদীগর্ভে বিলীন হয় প্রায় দেড় একর কৃষি জমিও। তারপর একটু নিরাপদ দূরত্বে আবারও ৪২ শতাংশ ভূমিতে ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু কালনী নদীভাঙন যেন পিছুই ছাড়ছে না হারুন মিয়ার। বছর তিনেক আগে সেই ভিটাটি আবারো নদীভাঙনের কবলে পড়ে। ইতোমধ্যে বাড়িটির ১৬ শতাংশ ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে পড়েছে।

হারুন মিয়া বলেন, আমার বাড়ি ১১২ শতাংশ ভূমির ওপর ছিল। সেখানে আমার বসত ভিটা, গোয়ালঘর, ধান রাখার ঘরসহ সব কিছুই ছিল। প্রায় দেড়যুগ আগে কালনী নদীর ভাঙনে সেই বসতভিটাসহ সব নদীতে চলে যায়। তারপর কিছুটা নিরাপদ দূরত্বে আবারো বাড়ি তৈরি করি। কিন্তু সেই বাড়িও এখন নদীভাঙনে চলে যাচ্ছে।

এদিকে পিরোজপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কালনী নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গ্রামের অনেক বাসিন্দারাই নিজেদের বসতভিটা রক্ষা করতে বাঁশের বেড় দিচ্ছেন নিজেদের খরচে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় বিশ বছর আগে পিরোজপুর গ্রামটি নদীভাঙনের কবলে পড়ে। শুরুতে মুসলিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বসতভিটা নদীগর্ভে চলে যায়। তারপর একে একে ধলাই মিয়া, ইয়াকুব মিয়াসহ প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানেও থেমে নেই ভাঙনের তাণ্ডব। গত ৬ মাসে আরও ১৪ থেকে ১৫ জনের বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে কয়েকটি বসতঘর ঝুঁকিতে আছে। যে কোনো সময় বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন পার করছেন তারা।

পিরোজপুর গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন মিয়া বলেন, প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে কালনী নদীর ভাঙনে আমরা বসতভিটা হারিয়েছি। এখন একেবারে শেষ সীমানায় ঝুঁকি নিয়ে বাস করছি। কেউ নতুন করে অন্যত্র ঘর তৈরি করে চলে গেছেন অন্য গ্রামে। বর্তমানে এই গ্রামের প্রায় তিনশোর মতো পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। দিনের পর দিন নদীভাঙলেও আমাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। বিভিন্ন সময় নির্বাচনের আগে আমাদের আশ্বাস দিলেও তার প্রতিফলন হয়নি আজ অবধি। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। আমরা প্রস্তাবনা তৈরি করছি। এটি অনুমোদন হলেই আমরা দ্রুত কাজ শুরু করতে পারবো আশা করছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা ভেঙে সংঘর্ষ, অ্যাম্বুলেন্স চালক নিহত

সহিংসতার ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ জানাল জিপিই

পুকুরে ফেলে যমজ কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগ, মা-বাবা আটক

টেক্সাসে প্রবল বন্যায় শতাধিক মৃত

গণমাধ্যমকে প্রকাশ্য হুমকি, অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের নিন্দা

পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণ, ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত

পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, এসআই প্রত্যাহার

বিয়ের পরে নারীদের ওজন বাড়ে কেন?

চাঁদা দাবির অডিও ফাঁস, বৈষম্যবিরোধী সেই ২ নেতাকে শোকজ 

গণঅভ্যুত্থানের দিনগুলো : ফিরে দেখা ৮ জুলাই

১০

ইরানের সমরাস্ত্র ভান্ডার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আইআরজিসির উপদেষ্টা

১১

বিশ্ব রাজনীতির নিয়ন্ত্রক এক পরিবার, ২০০ বছরের রহস্যময় গোপনীয়তা

১২

টিভিতে আজকের খেলা

১৩

রুহুল্লাহ খামেনিকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন সাদ্দাম হোসেন

১৪

বিমানবাহিনীতে যোগ দেওয়া প্রথম নারী এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেক

১৫

আজ থেকে নতুন দামে স্বর্ণ বিক্রি হবে

১৬

রেস্ট হাউসে ওসিকাণ্ড : স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সনি বহিষ্কার

১৭

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

১৮

গণঅভ্যুত্থানে আপস করিনি, ভবিষ্যতেও করব না : নাহিদ 

১৯

জাপান-কোরিয়াসহ ১৪ দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের

২০
X