কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বিমানবাহিনীতে যোগ দেওয়া প্রথম নারী এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেক

এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেক। ছবি : সংগৃহীত
এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেক। ছবি : সংগৃহীত

১৯৪৮ সালের ৮ জুলাই, রাত ঠিক ১২টা। ইতিহাসে এক নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তৈরি হয়েছিল সেই রাতে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার ফোর্ট ম্যাকফারসনে, এক সাহসী নারী- এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেক যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গঠিত বিমানবাহিনীতে প্রথম নারী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্ত নারীদের জন্য সামরিক সেবায় নতুন এক পথ উন্মোচনের প্রতীক হয়ে দাঁড়াল। মেয়েরাও যে আকাশে উড়তে পারে সব বাধা ভুলে, সেই ইতিহাসই তৈরি হলো এসথারের হাত ধরে।

এসথার ব্লেকের সামরিক জীবনে যোগদানের পেছনে ছিল গভীর ব্যক্তিগত প্রেরণা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে, ১৯৪৪ সালে, তিনি নারী সেনা কোরে যোগ দেন। কারণটা জানলে অবাক হবেন। তার বড় ছেলে একজন বৈমানিক ছিলেন, যিনি যুদ্ধের সময় বেলজিয়ামে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন। এসথার বিশ্বাস করতেন, যদি তিনি অফিসের কাজ নেন, তবে তার ছেলে হয়তো দ্রুত ঘরে ফিরতে পারবে।

যুদ্ধ চলাকালে তিনি সেনাবাহিনীর বিমান শাখায় একজন বেসামরিক কর্মচারী হিসেবেও কাজ করতেন। পরে যখন ১৯৪৭ সালের ২৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী একটি আলাদা বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে নারীদের স্থায়ীভাবে সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তুতি চলছিল। অবশেষে, ১৯৪৮ সালের ৮ জুলাই একটি নতুন আইন কার্যকর হলে এসথার ব্লেক প্রথম নারী হিসেবে বিমানবাহিনীতে নাম লেখান।

এসথার কেবল প্রথম নারী সদস্য ছিলেন না, বরং তিনি সমাজ ও বিশ্বের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি হন বিমানবাহিনীর প্রথম আনুষ্ঠানিক নারী সদস্য। তার পদক্ষেপ প্রমাণ করে দেয়, নারীরাও সামরিক বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শুধু যুদ্ধের সময় নয়, সবসময়ের জন্য।

যদিও তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেননি, বরং অফিসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেন, তবুও এসব কাজ ছাড়া বাহিনীর কাঠামো চলত না। তার কাজ ছিল নিষ্ঠা ও দায়িত্বের প্রতিচ্ছবি।

পরবর্তীতে তিনি সামরিক জীবন থেকে অবসর নেন, কিন্তু তার অবদান আজও স্মরণীয়। এসথার ব্লেক ছিলেন নারীদের সামরিক বাহিনীতে স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করার আন্দোলনের পথিকৃৎ। তার নিঃশব্দ সাহস নারীদের জন্য নতুন দরজা খুলে দেয়।

আজ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে নয় নারীরা সারা বিশ্বে পাইলট থেকে শুরু করে কমান্ডার পর্যন্ত নানা পদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এই অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল এসথার ম্যাকগোউইন ব্লেকের মতো এক নারীর সাহসিকতা দিয়ে। তার সেই প্রথম পদক্ষেপ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আকাশ কোনো সীমা নয়, বরং নতুন যাত্রার শুরু।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

খেলা শেষ হতেই রেফারির ওপর হামলা

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের জন্য সুখবর

আদালতের ‘ন্যায়কুঞ্জে’ খাবার হোটেল, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে উচ্ছেদ

অ্যানথ্রাক্স ছড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলে, রংপুর-গাইবান্ধায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু

১০

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা / জানলে যে সব বলে দিতে হবে সেটা তো না

১১

শেখ হাসিনা ও কামালের নির্বাচনী যোগ্যতা নিয়ে যা জানা গেল

১২

ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে চাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

১৩

খুন করে আল্লাহর ভয়ে নামাজ পড়ে ক্ষমা চান হত্যাকারীরা

১৪

ইংলিশদের বিপক্ষে মারুফাদের লড়াই করে হার

১৫

পিআর নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব : চরমোনাই পীর

১৬

ফুটবলকে বিদায় বললেন মেসির আরও এক সতীর্থ

১৭

প্রথমবারের মতো ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ

১৮

ভারতীয়দের জন্য সংকুচিত হচ্ছে মার্কিন দরজা

১৯

‘সোলজার’র প্রথম ঝলকে কী বার্তা দিলেন শাকিব খান?

২০
X