বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘লাইফটাইম গোল্ডেন ভিসা’ দেওয়া হচ্ছে—সম্প্রতি এমন খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদপোর্টালে ছড়ালেও তা পুরোপুরি গুজব বলে নিশ্চিত করেছে আমিরাত সরকার।
দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত করছে, এবং এসব গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে কোনো পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ বা ব্যক্তিগত তথ্য জমা না দিতে জনগণকে সতর্ক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল অথোরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি (আইসিপি)।
৮ জুলাই (মঙ্গলবার) আমিরাতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ওয়াম–প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কিছু স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম, ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়ানো হয়েছে যে—বাংলাদেশ ও ভারতের মতো নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকরা কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই আজীবন গোল্ডেন ভিসার সুযোগ পাচ্ছেন। অথচ বাস্তবে এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, গোল্ডেন ভিসা প্রদানের বিষয়ে দেশটির নিজস্ব একটি নির্দিষ্ট আইনি কাঠামো রয়েছে, যার আওতায় পেশাগত যোগ্যতা, বিনিয়োগ, দক্ষতা বা অন্যান্য যোগ্যতার ভিত্তিতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। এসব নিয়ম-কানুন এবং আবেদন প্রক্রিয়া শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও স্মার্ট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো দেশীয় বা আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে গোল্ডেন ভিসা প্রক্রিয়াকরণে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি এক বিদেশি কনসালটেন্সি ফার্মের পক্ষ থেকে ‘সব শ্রেণির মানুষ বিনিয়োগ ছাড়াই আজীবন গোল্ডেন ভিসা পেতে পারেন’—এই মর্মে প্রচারণা চালানো হয়, যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়াই করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এ ধরনের মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে দেশবাসীকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—কেবল সরকারি চ্যানেল ব্যবহার করে তথ্য যাচাই করে আবেদন করার জন্য।
এর আগে কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল, সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার একটি বিশেষ পাইলট প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকদের জন্য আজীবন বসবাসের সুযোগ দিতে যাচ্ছে। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ সেসব তথ্য নাকচ করে দিয়ে বলেছে, এমন কোনো প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়নি এবং এই ধরনের খবর একেবারেই ভিত্তিহীন।
সরকারি দপ্তর থেকে নাগরিকদের আহ্বান জানানো হয়েছে, আমিরাতে বসবাস, বিনিয়োগ বা ভ্রমণের ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া কোনো তথ্য বিশ্বাস না করতে এবং গুজব এড়িয়ে চলতে।
মন্তব্য করুন