লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে জমি নিয়ে বিরোধে ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মৃধাকে (৬২) হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২ অক্টোবর) ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে প্রধান আসামি দেলোয়ার মৃধাকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রোববার দুই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ২ নারী হলেন মিসু বেগম ও সুইটি আক্তার। তাদের লক্ষ্মীপুরের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শনিবার রাতে সাইফুলের স্ত্রী নাসিমা বেগম তার দেবর দেলোয়ার মৃধা, শিমুল হোসেন ও আবু মুছা মোহনসহ রায়পুর থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
রায়পুরা থানার এসআই কমল দে জানান, দেলোয়ার মৃধা সাইফুল আলমের ছোট ভাই এবং মিসু বেগম দেলোয়ারের শ্যালিকা ও সুইটি আক্তার ভাবি হন। তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে এবং অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের কবিরহাট এলাকায় মৃধা বাড়িতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাইফুলসহ দুপক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন। আহত সাইফুল আলমকে রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলার বামনী ইউনিয়নের কবিরহাট এলাকায় সাইফুল আলম ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেন মৃধার মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে জমি দখল পাঁয়তারা ও হুমকি অভিযোগ এনে দেলোয়ার শনিবার দুপুরে থানায় সাইফুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দুপক্ষকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেন। তবে সন্ধ্যায় বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে নাহার বেগম, দেলোয়ার হোসেন মৃধা, নাজমুন নাহার, আবু মুছা মোহন ও শিমুল হোসেনসহ ৭ জন আহত হন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সাইফুল আলমের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, দেলোয়ার মৃধা লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার জন্য দেবর দেলোয়ারসহ তার লোকজনই দায়ী। আমি তাদের বিচার চাই।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, আমার ভাই, ভাবি, ভাতিজা অন্যায়ভাবে জমি দখল করতে আসে। এ সময় বাধা দিতে গেলে তারা অতর্কিত হামলা করে আহত করে। আমি আগে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। এরপরই আমাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন ভাতিজা আমাকে মারতে আসলে তা ভাইয়ের শরীরে লাগলে স্ট্রোক করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান।
বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন মুন্সি বলেন, জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ ছিল। ঘটনার সময় দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মারামারি হয়। পরে আহত সাইফুল মারা যান।
রায়পুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শামছুল আরেফিন বলেন, সাইফুলের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়। এ ঘটনায় আটক প্রধান আসামি দেলোয়ার মৃধাসহ দুই নারীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। অন্যদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন