মোংলায় সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলজুড়ে গত তিন দিন টানা বৃষ্টিপাতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও বন্দরে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা। উপকূলজুড়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতে পৌর শহরসহ উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ী, বন্ধ হওয়ার উপক্রম পরিবারের রান্নাবান্না। রাস্তা ও ঘরে পানি উঠায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল রাতভর টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে মোংলা বন্দরসহ আশপাশ এলাকা জুড়ে। বুধবার ভোর থেকে কখন একটানা আবার কখনও কখনও থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে এ উপকূল জুড়ে।
মোংলা মুসলিম পাড়া এলাকার সামছুর রহমান, সানজিদা বেগম ও মানছুরা আক্তার জানায়, বৃষ্টির কারণে ঘর থেকে বের হতে হওয়া যাচ্ছে না। বাড়ির সামনে রাস্তায় পানি জমে গেছে। নিচু রান্না ঘর, সেখানে বৃষ্টির পানি উঠে তলিয়ে গেছে। কোনোরকম কাঠ দিয়ে মাচা তৈরী করে গ্যাসের চুলা নিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। শহরের ড্রেনেজ ব্যাবস্থা থাকলেও তা পর্যাপ্ত নয়, যার ফলে রাস্তা থেকে পানি দ্রুত নামছে না। তাই ঘরের মধ্যে পানি ডুকে যাওয়ায় কিছুক্ষণ পর পর পানি সেচতে হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টিপাতের কারণে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে তিনটি সারবাহী জাহাজের ওঠানামা ও পরিবহণের কাজও। এ ছাড়া বাকি ৬টি বিদেশি জাহাজের কার্যক্রমও চরম বিঘ্নিত হচ্ছে।
মোংলা বন্দরের শিপিং ব্যাবসায়ী এইচ এম দুলাল জানায়, বন্দর এলাকায় বেশি বৃষ্টিপাত হলে বন্দরে অবস্থানরত খাদ্য ও সারবাহী জাহাজে পণ্য খালাস করা যায় না। কারণ সার কিংবা গম-চালের বস্তায় পানি ঠুকলে তা পচে তা নষ্ট হয়ে যায়, যার ফলে বৃষ্টর সময় কাজ বন্ধ রাখতে হয়। তবে যথা নিয়মে কয়লা, পাথর বা ক্লিংকারসহ অন্যান্য জাহাজের খালাস-বোঝাই চলছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হওয়ায় মঙ্গলবার মোংলা বন্দর তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস। এরপর মঙ্গলার দিন-রাতে সমানে ও বুধবার ভোর থেকে টানা বৃষ্টিপাত বয়ে যাচ্ছে। তবে এমন পরিস্থিতি আগামী তিনদিন ধরে অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগের অফিস স্টাফ সৈকত বর্মন।
মন্তব্য করুন