রংপুরের পীরগাছার কান্দি ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর ফিরোজ মিয়া ওরফে ফেরেস হত্যা মামলার ৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন রংপুর জেলা দায়রা জজ আদালত। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিচারক তৌহিদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে ৪ আসামি উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ মিয়া ওরফে ফেরেস (২২) উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের কাবিলাপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে। গত ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোথাও না পেয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি পীরগাছা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন ফেরেসের বাবা। এদিকে ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিমি দূরে মাষাণকুড়া নদী সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি গুচ্ছগ্রামে মাটি চাপা দেওয়া একজনের লাশ মাটি খুঁড়ে বের করে কুকুর। পরে লাশ দেখে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। এ সময় এটি ফেরেসের লাশ বলে শনাক্ত করেন তার পরিবারের লোকজন।
পরে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে টিপু, শাহিন মিয়া, সুলতান হোসেন ও জাহিদুল ইসলাম নামে চার বন্ধুকে আটক করে। এদের মধ্যে শাহিন মিয়া ও জাহিদুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে এক লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিতে পরিকল্পিতভাবে ফিরোজ মিয়া ওরফে ফেরেসকে হত্যা করে মাটির নিচে পুঁতে রাখা হয় বলে আদালতে স্বীকার করে আটক চার বন্ধু।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা কান্দি বাজারে ফেরেস হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন করে। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে সোমবার (৩০ অক্টোবর) রংপুর জেলা দায়রা জজ তৌহিদুর রহমান ৪ আসামির সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নিহত ফেরেসের চাচা রকি মিয়া বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেছিলাম। তারপরও এ রায়ে আমরা খুশি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক।
মন্তব্য করুন