শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:১০ এএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:২৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বিলুপ্তির পথে বাবুই

তালগাছে সারি সারি ঝুলছে বাবুই পাখির বাসা। ছবি : কালবেলা
তালগাছে সারি সারি ঝুলছে বাবুই পাখির বাসা। ছবি : কালবেলা

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বিলুপ্তির পথে কবি রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী ছড়ার শিল্পীপাখি বাবুই। এখন আর যত্রতত্র দেখা মেলে না তাদের। উঁচু গাছ বা তাল গাছের স্বল্পতা ও প্রকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। এতে পরিবেশের ভারসাম্যও নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা।

জানা গেছে, গ্রীষ্মকাল বাবুই পাখিদের প্রজনন ঋতু। এই সময় এরা বাসা বাঁধে। সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। স্ত্রী পাখির প্রেরণায় পুরুষ বাবুই পাখি মনের আনন্দে বিরামহীনভাবে বাসা তৈরির কাজ শেষ করে। একটি পুরুষ বাবুই পাখি একটি মৌসুমে প্রায় পাঁচ থেকে ছয়টি বাসা তৈরি করতে পারে। তবে প্রেমিক বাবুই পাখি যতই ভালোবাসা প্রকাশ করুক না কেন প্রেমিকা বাবুই পাখি ডিম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রেমিক বাবুই আবার সঙ্গী খোঁজার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এভাবেই চলে বাবুইদের জীবনের গল্প।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে তাল পাতায় গড়া নিপুণ কারুকার্যে খচিত বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখির প্রধান আবাসস্থল বাংলার ঐতিহ্য তালগাছ এখন আর তেমন দেখা যায় না, তাই তেমন একটা চোখে পড়ে না শিল্পীপাখি বাবুইরও। অথচ আজ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ বছর আগেও ওই এলাকার গ্রামগুলোর বাড়ির পাশের, মাঠ-ঘাটের তাল গাছে দেখা যেত এদের বাসা। দেখা যেত এদের শিল্পকর্মের নিপুণ দৃশ্য। বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দও এখন স্মৃতির মতো।

স্থানীয় বাসিন্দা মুঞ্জুর আলী (৮১) বলেন, বাবুই এই অঞ্চলের প্রায় প্রতি বাড়ির পাশের তাল গাছে, পুকুর পাড়ের তাল গাছে দেখা যেত। তাদের গড়া বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি অনেক মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙে পড়ে না। এক সময় বিভিন্ন প্রজাতির বাবুই পাখি দেখা এই অঞ্চলে দেখা যেত। এরমধ্যে অনেক বাবুই এখন বিলুপ্তির পথে। টিকে আছে কিছু দেশি বাবুই। এদের বিলুপ্তির প্রধান কারণ উঁচু জাতীয় গাছ, তালগাছ কমে যাওয়া।

পাখিপ্রেমী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হাসনাত মো. মহিউদ্দিন মুবিন বলেন, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পাখিদের আবাসস্থল নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। সে জন্য প্রতিটি নাগরিকের উচিত গাছ লাগানো। বাবুই পাখিরা উঁচু গাছে বাসা বাঁধে। তাই তালগাছ, নারিকেল গাছ ও খেজুরগাছ লাগানো প্রয়োজন। এতে বিলুপ্তির পথে হাঁটা শিল্পীপাখি বাবুই আবারও আগের মতোই চোখে পড়বে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখিদের আবাসস্থল নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেমিনারে ঢাবি অধ্যাপক  / পুলিশ রিমান্ডে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় বিচারিক প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত সহিংসতা

ইসরায়েলকে ঠেকাতে ছেলেকে পাঠিয়ে ইরানকে সতর্ক করল সৌদি বাদশা!

হৃদরোগ সচেতনতা সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি : ডা. জুবাইদা রহমান

এসএ গেমসে ৬৫০ জনের বাংলাদেশ কন্টিনজেন্ট চূড়ান্ত

কাবাডির ফাইনালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ

ভূপাতিত ৫ ভারতীয় যুদ্ধবিমান, স্বীকারোক্তি বিজেপি নেতার!

ছাত্রাবাসে ৫ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি, ছাত্রলীগ নেতা আটক

পালিয়ে থেকেও শেষরক্ষা হলো না রাকিবের

সাকিব ইস্যুতে যা বললেন বিসিবির নতুন সভাপতি

সিরিজ বাঁচাতে রানের পাহাড় টপকাতে হবে বাংলাদেশকে

১০

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের মাঝে খাবার বিতরণ

১১

যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হচ্ছে ‘বার্থ ট্যুরিজম’

১২

১০ দিনের ব্যবধানে হাতির আক্রমণে বৃদ্ধার মৃত্যু

১৩

পোস্টিং পছন্দ হয়নি তাই হাসপাতালে আসেন না চিকিৎসক

১৪

বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চলতি বছর

১৫

‘চিকেনস নেক’-এ রাফাল জেট ও এস-৪০০ বসাল ভারত

১৬

জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলা, নেপথ্যে কারা

১৭

টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকবাহী নৌকায় আগুন

১৮

সমাজ পরিবর্তন শুধু স্লোগানে হবে না : ডা. তাহের

১৯

যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

২০
X