হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:১৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

হাতীবান্ধায় শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ছবি : কালবেলা
শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ছবি : কালবেলা

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশ্মশানে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

শশ্মানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে মহল ইসলাম গংদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ১৯৩৫ সালে ওই শ্মশানটি স্থাপিত হয়। হঠাৎ করে গত কয়েক মাস ধরে শ্মশানের জমি নিজেদের দাবি করছেন মহল, রেজাউল, সাজু, দুলাল, মন্টুসহ আরও অনেকে। এ নিয়ে মন্দির কমিটির সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছে। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে দুর্বৃত্তরা ওই শ্মশানের ঘর ও মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করে। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ওই মন্দিরের পূজারী নিরু বালা বলেন, আমি সকালে পূজা করে আসি। এ সময় অভিযুক্তরা লাঠি, পাথর ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে বলে ‘এ হিন্দু বেটি তোরা কীভাবে পূজা করিস আয়তো দেখি।’ এ কথা বলেই শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর শুরু করে। ভাঙচুর শেষে তারা সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ষাটোর্ধ ফজলুল হক বলেন, আমি আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি হিন্দুরা ওই শ্মশানে দাহ করে। শ্মশানের মন্দিরে পূজা করে। শুধু আমি নই, আমার দাদা ও বাবারাও দেখে আসছেন। তাদের কাছেও শুনেছি। হিন্দুরা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা সবাই এক সাথে বসবাস করি। তাদের শ্মশান ভাঙচুর ও মন্দিরে আগুন দেওয়া ঠিক হয়নি। যারা এ কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক।

স্থানীয় বাসিন্দা নূর জাহান বেগম বলেন, সকালে অভিযুক্তরা ওই শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর করে অগ্নি সংযোগ করে সেখানকার সব কিছু বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু জিনিস উদ্ধার করে। এ বিষয়ে বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশশ্মানের সভাপতি স্বপন রায় বলেন, অনেক বছর ধরে আমরা ওই শ্মশান ব্যবহার করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে মহল, রেজাউল, সাজু, দুলাল, মন্টুসহ আরও অনেকে শ্মশানের জমিটি নিজেদের দাবি করে আমাদের জমিটি ছেড়ে দিতে বলে। আমরা জমি ছেড়ে না দেওয়ায় তারা আমাদের শশ্মান ও মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করেছেন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ঘটনায় হাতীবান্ধা থানায় একটি মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো মন্দির ভাঙচুর করিনি। তারাই তাদের মন্দিরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ওখানে কোনো শ্মশান ছিল না। ওই জমি আমার বাপ-দাদার সম্পত্তি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবু দিলীপ কুমার সিংহ বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের থানায় অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহ আলম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খাওয়ার পর করা এই ৮ কাজ ডেকে আনবে বিপদ, বলছেন বিশেষজ্ঞ

এবার নাহিদা-সোবহানারাও হারল যুবাদের কাছে

গুম-খুনের জন্য হাসিনার বিচার হতেই হবে : মির্জা ফখরুল

৩৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ইতি টানছেন গোবিন্দ ও সুনীতা

ফেনী থেকে নির্বাচন করবেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান 

চাঁদাবাজি ও ছিনতাইর অভিযোগে সাবেক সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলল ছাত্রদল

ঐকমত্য কমিশনে মতামত দেয়নি যেসব দল

গ্রোক চ্যাটবটের সঙ্গে কথোপকথনের লাখো তথ্য ফাঁস

গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই, বলল ইসরায়েল

১০

হোটেলে নিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ, সাবেক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে মামলা

১১

অজিদের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের রেকর্ড সিরিজ জয়

১২

তিস্তা সেচ ক্যানেলে নেমে ২ শিশুর মৃত্যু 

১৩

ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হচ্ছে সৌরজগতের সবচেয়ে দ্রুতগতির গ্রহ

১৪

পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হলে নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হবে : ডা. তাহের

১৫

ডাকসুর নারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মুখ খুললেন সাদিক কায়েম

১৬

নিখোঁজের পর নদীতে মিলল সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের মরদেহ

১৭

আরও উন্নত ব্যাকআপ সুবিধা নিয়ে গুগল

১৮

গেণ্ডারিয়ায় ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যু

১৯

যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ৫০ লাখ ভিসাধারীকে যাচাই শুরু, প্রমাণ মিললে ব্যবস্থা

২০
X