চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ০৯:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতির কোনো মূল্য নেই : তথ্যমন্ত্রী

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী। ছবি : কালবেলা
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী। ছবি : কালবেলা

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের জন্য বিবৃতি দেয়, ফিলিস্তিনে শিশুরা পাথর ছুড়লে ইসরাইলি বাহিনী গুলি ছুড়ে পাখি শিকারের মতো শিশুদের হত্যা করে; তাদের বিরুদ্ধে কোনো শব্দ করে না। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বাংলাদেশে মানুষ পোড়ানোর বিরুদ্ধে কিছু বলে না, তাদের বিবৃতির কোনো মূল্য নাই। এই দুটি সংগঠন আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

শনিবার (২৪ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও সাফল্যের ৭৪ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম।

হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী নির্বাচন হচ্ছে দেশের ভূমি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার নির্বাচন। দেশ কি পাকিস্তান হবে, নাকি দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অভিযাত্রায় আরও দ্রুত বেগে এগিয়ে চলবে—সেটির ফয়সালা হওয়ার নির্বাচন। এই দেশে কোনো তাবেদারি সরকার বসবে, নাকি যারা দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিবে তারা বসবে, নাকি শেখ হাসিনার মতো স্বাধীনচেতা জননত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার থাকবে সেটি ফয়সালা হওয়ার নির্বাচন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম অ্যামনেস্টি ইান্টারন্যাশনাল একটা বিবৃতি দিয়েছে। আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যারা র্যাবে কাজ করবে কিংবা মানবাধিকার লংঘনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাদের যেন স্ক্রিনিং করা হয় এবং শান্তিরক্ষী বাহিনীতে না নেয়া হয়।

তিনি বলেন, আমরা অ্যামনেস্টিকে চিনি, তারেক রহমানের বেয়াইন আইরিন খান অ্যামনেস্টির জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন। এখনো অ্যামনেস্টির সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনি তারেক রহমানের বউয়ের চাচাতো বোন। এই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধীদের যখন বিচার শুরু হলো, তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিবৃতি দিয়েছিল। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যখন বিএনপি-জামায়াত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করছিল তখন সেটার বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতি দেয়নি। আরেকটা সংগঠন আছে—হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। ওনারাও মাঝে মধ্যে বিবৃতি দেয়।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ ও ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’—এগুলোর বিবৃতি কীভাবে হয়, কোথায় ড্রাফট হয়, আর কীসের বিনিময়ে এই বিবৃতি আসে সেটা আমরা জানি। যারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য বিবৃতি দেয়, ফিলিস্তিনে পাখি শিকারের মতো যেভাবে মানুষ শিকার করা হয় তখন ইসরাইলের বিপক্ষে কোনো বিবৃতি দেয় না। আমাদের এগুলো নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার নৈতিক কোনো অধিকার তাদের নাই। আমাদের দেশের কিছু পত্রপত্রিকা সেগুলোকে বড় করে ছাপায়। এই বিবৃতির কোনো মূল্য নাই। সুতরাং এগুলোতে বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো দরকার নাই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন বঙ্গবন্ধু ও আমাদের পূর্বসূরি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নপূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে, তখন আজকে আবার দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অপশক্তি এক হওয়ার চেষ্টা করছে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সেই কারণে আজকে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে। সেই লবিস্টের পেছনে মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে কয়েকটা বিবৃতি আর কিছু কিছু কংগ্রেসম্যান কিংবা ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট মেম্বারের চিঠি ক্রয় করা হয় দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের মেম্বার হচ্ছেন ৭০৫ জন। তার মধ্যে মাত্র পাঁচজন বাংলাদেশের ব্যাপারে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ফরেন আ্যফেয়ার্স কমিটির চেয়ারের কাছে চিঠি দিয়েছেন। যেটির কোনো মূল্য নাই। অথচ আমাদের দেশকেও চিঠি দেয় নাই তারা। এটা নিয়ে কী যে মাতামাতি, পত্রিকায় কত সংবাদ। এতে পুলকিত মির্জা ফখরুল দেখি দুই ইঞ্চি লাফ দেয়।

তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে ২০০২ সালে যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন পাস করেছিল; বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর দমনপীড়ন হচ্ছে। তখন সাতশর বেশি পার্লামেন্ট মেম্বার ছিল। এখন ৭০৫ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজন একটা চিঠি দিয়েছে। এগুলোতে ওনাদের কী লেগেছে জানি না, সম্ভবত কাতুকুতু লেগেছে।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন সমাগত, এই নির্বাচন আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই নির্বাচন হচ্ছে দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূমি রক্ষার নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হবে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে নাকি সমুদ্রের একটা অংশ কেউ নিয়ে যাবে। এই নির্বাচনে ফয়সালা হবে দেশে কী হামিদ কারজাই মার্কা তাবেদারি সরকার হবে নাকি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মঈনুদ্দীন, এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নাটোরে বাসচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রথম দেখাতেই মানুষ চিনে নিন ৫ মনোবিজ্ঞানভিত্তিক ট্রিকসে

পাচার অর্থ ফেরাতে / ১২টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চুক্তি করতে নির্দেশ

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের গোপন আস্তানায় অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার

সাতক্ষীরায় সিভিল সার্জনের অপসারণ দাবিতে অফিস ঘেরাও

এভারেস্ট উপত্যকায় শতাধিক পর্যটক আটকা, উদ্ধার অভিযান চলছে

জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসের আয়োজনে বক্তারা / জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সর্বজনীন করতে আইন সংস্কার অপরিহার্য

তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের বৈঠক

ভর্তার স্বাদ বাড়াতে জানুন ছোট্ট কিন্তু দারুণ কিছু টিপস

ট্রেনে কুবি শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করায় ৫ যুবক আটক

১০

যাই দেখছি সব নতুন লাগছে, বিসিবি নির্বাচনে ভোট দিয়ে আমিনুল

১১

ধর্মভিত্তিক দলগুলোর ঐক্যকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখি : নিলোফার মনি

১২

নারী সহকর্মীদের নিয়ে বিস্ফোরক দাবি রুনা খানের

১৩

‘উপসর্গ থাকলেও নারীর মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে নয়’

১৪

ওমরাহ নিয়ে সুখবর দিল সৌদি আরব

১৫

জামায়াত আমিরের সঙ্গে কসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

১৬

আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৯ ইউনিট

১৭

দুর্ঘটনায় মা হারানো শিশুটির কান্না থামাবে কে ‎

১৮

দাউদকান্দি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সুমন গ্রেপ্তার

১৯

বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক, তার সঙ্গে কাজ করবে ভারত: বিক্রম মিশ্রি

২০
X