প্রায় ৯ বছর পর পুলিশের সহযোগিতায় নিজ পরিবারে ফিরেছেন ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা মা।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার রাস্তার পাশে পড়ে ছিলেন সুফিয়া খাতুন (৭০)। তাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছে পুলিশ। তিনি দিনাজপুরের বীরগন্জ উপজেলার ডাকেশ্বরী গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রী।
গত শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সুফিয়াকে তার ছেলে বাবুল হোসেন (৫১) ও মেয়ে ফাতেমা আক্তারের (৫০) কাছে হস্তান্তর করেন ডিমলা থানার ওসি দেবাশীষ রায়। পরিবারের সদস্যরা বলেন, প্রায় নয় বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন সুফিয়া খাতুন।
ডিমলা থানা সূত্রে, গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চাপানি বাজারে রাস্তার পাশে এক বৃদ্ধা মহিলা অভুক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। বিষয়টি জানতে পেরে ডিমলা থানার ডিউটিরত এসআই আফছার আলী সেখান থেকে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন।
আফছার আলী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে দেখছি চাপানি বাজারের একটি গলিতে ওই বৃদ্ধা মানবেতর জীবনযাপন করছিল। ওই বৃদ্ধা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল থাকায় ঠিকানা ও পরিচয় ঠিকমতো বলতে পারছিলেন না। তার দেওয়া আংশিক তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন থানায় খোঁজ খবর নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করি আমরা। পরে তাকে উদ্ধার করে পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা বলেন, ওই বৃদ্ধা গত ৮ থেকে ৯ বছর চাপানি বাজারে অবস্থান করছিলেন। তিনি মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ছিলেন।
বৃদ্ধার ছেলে বাবুল হোসেন জানান, গত ৯ বছর আগে নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন তার মা সুফিয়া খাতুন। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মাকে কোথাও পায়নি। পাঁচ বছর আগে বাবার মৃত্যু হয়। একপর্যায়ে মাকে খুঁজে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। পুলিশের মানবিকতায় হারানো মাকে এত বছর পর ফিরে পেলাম আমরা।
ডিমলা থানার ওসি দেবাশীষ রায় বলেন, বীরগঞ্জ থানায় বৃদ্ধার ছবি পাঠিয়ে পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়। সেখানে থানা পুলিশের সহযোগিতায় তার সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়। পরে শুক্রবার রাতে তাকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
দেবাশীষ রায় আরও জানান, নয় বছর পর সুফিয়া খাতুন কে ফিরে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ যেন এক মহামিলনের দৃশ্য।
মন্তব্য করুন