টাঙ্গাইলে লাইনচ্যুত রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটির ক্ষতিগ্রস্ত বগির উদ্ধারকাজ শেষে ১০ ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। এতে প্রতিটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যস্ত হয়েছে। টাঙ্গাইল স্টেশন মাস্টার নাজমুল হুদা বকুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্টেশন মাস্টার জানান, রংপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেন টাঙ্গাইলে লাইনচ্যুত হওয়ার ১০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়। এর ফলে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়ে আসে। এদিকে উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত হওয়ার আগে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন লাইনের রেলস্টেশনে ৫টি ট্রেন আটকে পড়ে। রেল চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পর আটকে থাকা ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে রওনা হয়।
এর আগে রংপুর থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি মঙ্গলবার ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের আগবেতর তারাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে ইঞ্জিনের সঙ্গের মালবাহী বগিটি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। এরপর থেকে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুই কিলোমিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
খবর পেয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী একটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্ধার কাজ শুরু করেন রেলের উদ্ধারকর্মীরা। পরে রিলিফ ট্রেনের যান্ত্রিকত্রুটির কারণে সেটিও বিকল হয়ে যায়। এজন্য ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে উদ্ধার কাজ চালায় রেল কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব স্টেশন মাস্টার (বুকিং) রেজাউল করিম বলেন, টাঙ্গাইল রেল স্টেশনের আগবেতর তারাবাড়ি এলাকায় ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলস্টেশনে ঢাকাগামী একতা এক্সপ্রেস, সেতুর পশ্চিমে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ও জামতৈল স্টেশনে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়াও মির্জাপুরের মহেড়ায় উত্তরবঙ্গগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস এবং নীলসাগর এক্সপ্রেস মির্জাপুর স্টেশনে আটকা পড়ে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
টাঙ্গাইল ঘারিন্দা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নাজমুল হুদা বকুল জানান, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভোর ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের আগবেতর তারাবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে ট্রেনের প্রথম বগিটি লাইনচ্যুত হয়। বগিটিতে যাত্রীদের মালামাল ছিল। পরে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেনের যাত্রীদের টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ছাড়া কিছু যাত্রী যাত্রীবাহী বাসে করে তাদের গন্তব্যে চলে যান।
রেলের বগি লাইনচ্যুতর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান বিন মোহাম্মদ আলী। ইউএনও বলেন, ১৬টি বগির মধ্যে ১টি বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। প্রাথমিকভাবে এটাকে নাশকতা মনে হচ্ছে না। রেলের উদ্ধারকারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন