অবশেষে সেই নন স্টপ সার্ভিস কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনে এসি ও নন এসি দুটি কোচ পাচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসী। আগামী ১ ডিসেম্বর দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত বাণিজ্যিকভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে পর্যটন শহর কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন যাবে। এ জন্য আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে অগ্রিম টিকিট বিক্রি। কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলবে নন স্টপ সার্ভিসে। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাত্রীরা টিকিট কেটে ট্রেনে যাত্রা করতে পারবেন। ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশনে ২০ মিনিটের জন্য অপারেশনাল বিরতি দিবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও চলছে। তবে এই কোচ প্রথমে না দেয়ার বিষয়ে গতকালের দৈনিক কালবেলার ৩য় পাতায় ‘প্রথম যাত্রায় বঞ্চিত হচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসী’ শীষক এক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের উপ বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল পথে চট্টগ্রাম থেকেও এসি ও নন এসি দুটি কোচ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যাত্রীরা চট্টগ্রাম থেকে টিকিট কেটে রেলে উঠতে পারবেন। যাত্রীসেবা ও ভ্রমন নিশ্চিত করতে নানা ধরণের মনিটরিংও করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীরাও প্রথম যাত্রায় কক্সবাজার যেতে চান। সে ক্ষেত্রে রেল প্রশাসন প্রথম যাত্রায় চট্টগ্রামবাসীর জন্য দুটা কোচ দেয়ায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি যাত্রীসেবার সুফল আসবে বলে জানান তিনি। একই কথা বললেন শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের প্রধান উপদেষ্টা কামাল পারভেজ বাদলও।
জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে রেল যোগে কক্সবাজার যাওয়া জন্য দুটি কোচ চট্টগ্রাম থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কোচ ‘ঘ’ (এসি চেয়ার) ও কোচ ‘ট’ (শোভন চেয়ার)। ঢাকা হতে চট্টগ্রাম পর্যন্ত টিকিট বিক্রয় হবে এ দুটি কোচের। চট্টগ্রাম হতে টিকিট ক্রয় করে চট্টগ্রামের যাত্রীরা রেলে উঠবেন। এসি ও নন এসি মিলে প্রায় ১১৫টি সিট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার শোভন চেয়ারের টিকিটের মূল্য ২৫০ টাকা, স্নিগ্ধা ৪৭০ টাকা, এসি সিট ৫৬৫ টাকা ও এসি বার্থ ৮৪৫ টাকা।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন উদ্বোধন করেন। ওই দিনই আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সাবাজার রেল চলাচলের কথা ঘোষণা করা হয়। প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় রেল লাইনটি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা উন্নতমানের নতুন ১৮টি কোচ সম্বলিত আন্তঃনগর ট্রেনটি চালানো হবে এই রুটে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল পথে কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত কোচ দিয়ে ৮১৩ ও ৮১৪ নম্বরের এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালানো হবে। এটির আসন ৭৮০টি। সপ্তাহের সোমবার ও মঙ্গলবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ট্রেনটি রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে পরদিন ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনে পৌঁছাবে। ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিটের এই যাত্রা পথে শুধু ঢাকা বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে অপারেশনাল বিরতি করবে। একইভাবে দুপুর ১টায় কক্সবাজার ছেড়ে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের রেল পথের দুরত্ব ৫৩৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ১৫০ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।
মন্তব্য করুন