মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:০৩ এএম
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

বানর তাড়াতে বাড়ির আঙিনায় কাকতাড়ুয়া

বানরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির আঙিনায় স্থাপন করা কাকতাড়ুয়া। ছবি : কালবেলা
বানরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির আঙিনায় স্থাপন করা কাকতাড়ুয়া। ছবি : কালবেলা

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার রামশিড়ায় নিজের বসত বাড়িতে বানরের আক্রমণ ঠেকাতে গ্রাম বাংলার সনাতনী বিমূর্ত প্রতীক কাকতাড়ুয়া পদ্ধতি অনুসরণ করেন কৃষক আব্দুল খালেক।

পশুপাখিকে ভয় দেখানোর জন্য জমিতে রক্ষিত মানুষের প্রতিকৃতি হিসেবে এই গ্রামীণ জনপদে অতিপরিচিত দৃশ্য হলো এই কাকতাড়ুয়া। তবে এই কাকতাড়ুয়া যে শুধু পশু পাখিকে ভয় দেখায় তা নয়। রাতের বেলায় হঠাৎ কাকতাড়ুয়া নজরে এলে অনেক পথচারী ভয়ে চমকে যায়।

কালের বিবর্তনে পশু, পাখি থেকে ফসল রক্ষার এই সনাতন পদ্ধতিটি গ্রাম বাংলার বিমূর্ত প্রতীক হয়ে উঠে আসে গল্প, কবিতা, নাটক, উপন্যাস, ও সিনেমায়, শিল্পীর চিত্রকর্মে বিভিন্ন বইয়ের প্রচ্ছদে প্রচ্ছদে।

লম্বা খাড়া দণ্ডায়মান একটি খুঁটি এবং দুই বা তিন ফুট উপরে আড়াআড়ি আরেকটি খুঁটি বেঁধে তাতে ছন বা খড় পেঁচিয়ে মোটাসোটা করা হয়। তারপর আড়াআড়ি বাঁধানো অংশের সামান্য উপরে ছন বা খড়কুটো দিয়ে ডিম্বাকৃতি বা মাথার মতো বস্তু বানানো হয়। এরপর পরিত্যক্ত ছেঁড়া জামা বা পাঞ্জাবি পরিয়ে দেওয়া হয় এটিকে। গোলসদৃশ কোনো কিছু দিয়ে মাথা আকৃতি বানিয়ে চোখ-নাক-মুখ এঁকে দেওয়া হয় চুন বা চক দিয়ে।

কিন্তু বসতবাড়িতে এ কাকতাড়ুয়া বানানো হয়েছে শুধু বানর তাড়ানোর জন্য। ইদানীং বনজঙ্গল কেটে ফেলায় বানরের দল লোকালয়ে এসে ভাতের হাড়ির ভাত খেয়ে ফেলেছে মর্মে এমন মুখরোচক গল্প শোনা যাচ্ছে। বানর বাড়িতে ঢুকে যা পায় সব নষ্ট করে ফেলে। নিজেদের বসতবাড়ির লাউ, কুমড়া, পেঁপে বানরের দল নিয়ে চলে যায়।

কৃষক আব্দুল খালেক বানরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে সনাতনী পদ্ধতি অনুসরণ করে বিশাল আকৃতির ৮ ফুটের একটি কাকতাড়ুয়া বানিয়েছেন যা দেখলে বানরের দল ভয়ে অন্যত্র চলে যায়। আপাতত রক্ষা পাওয়া যায় তাদের যন্ত্রণা থেকে। কৃষক আবদুল খালেক বলেন, আমার বসতবাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন জাতের শাক সবজি লাগিয়েছি। বানরের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে অতিষ্ঠ হয়ে এটি বানিয়েছি। এখন আর বানর আসে না। কাকতাড়ুয়াকে দেখলে বড় আকৃতির মানুষ দাঁড়িয়ে আছে মনে করে তারা এ পথ দিয়ে আর আসে না।

মাটিরাঙ্গা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, চাষাবাদে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় কৃষক আগের মতো আর কাকতাড়ুয়া ব্যবহার করছে না। দিন দিন প্রতিটি এলাকায় কৃষকের কাছে পার্চিং ও আলোকফাঁদ পদ্ধতির ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে গ্রাম বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য হিসেবে কাকতাড়ুয়া হাজার বছর বেঁচে থাকুক তাদের ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে এমনটি প্রত্যাশা করেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জানুয়ারি থেকে সচিবালয় সম্পূর্ণরূপে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকমুক্ত হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

মোবাইলে যেভাবে দেখবেন আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচ

মুখের ব্রণ চেপে ফাটাচ্ছেন? হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ

ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপ / গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনায় অধিকাংশ মার্কিন ইহুদি

স্ত্রী-শাশুড়িকে কুপিয়ে জখম, ধানক্ষেতে পড়ে ছিল যুবকের নিথর দেহ

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করল এনসিটিবি

ভাইকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেয় বোন, ভেসে উঠল দুজনের নিথর দেহ

ইলিশ রক্ষায় অভিযান, প্রথমদিনেই ২২০ টন জব্দ

কখন এবং কতটা শক্তিতে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’?

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু

১০

মতবিনিময় সভায় বক্তারা / মহাসড়কে নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনে জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য

১১

৩ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

১২

নারায়ণগঞ্জে শান্তিপূর্ণ দুর্গাপূজা উদযাপন

১৩

কারখানায় কাজ বন্ধ, মহাসড়কে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ

১৪

বিশ্বকাপের ম্যাচেও হাত মেলাননি ভারত ও পাকিস্তান অধিনায়ক

১৫

আ.লীগের সাবেক এমপি মোজাম্মেল হক গ্রেপ্তার

১৬

স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

১৭

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিল অর্থ মন্ত্রণালয়

১৮

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

১৯

‘ধর্ম অবমাননা’ : সেই অপূর্ব পালকে নিয়ে যা বললেন আহমাদুল্লাহ

২০
X