ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়নের কাউটাইল এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখলমুক্ত করতে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও স্থানীয় প্রশাসন।
বুধবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ অভিযানে অবৈধভাবে নির্মিত তিনটি স্থাপনার মধ্যে সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বাংলোবাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এ উচ্ছেদ কার্যক্রম ছিল বিআইডব্লিউটিএ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের দুই দিনের বিশেষ কর্মসূচির অংশ, যা ২০ ও ২১ আগস্ট যৌথভাবে পরিচালিত হয়েছে। পোস্তগোলা সেতু থেকে ধোপাতিয়া বা কাটুরাইল খেয়াঘাট পর্যন্ত নদীর তীর লক্ষ্য করে এ অভিযানের মাধ্যমে দখলদারদের অবৈধ স্থাপনা ও ভরাট জমি অপসারণ করা হয়।
অভিযান পরিচালনায় বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে সহায়তা দিয়েছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসার সদস্য এবং ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয় এবং যে কোনো ধরনের বাধা প্রতিরোধে মোতায়েন রাখা হয় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এ উচ্ছেদ কার্যক্রম হাইকোর্টে করা রিট পিটিশনের আদেশ বাস্তবায়নের অংশ। নদীর জমি রক্ষার স্বার্থে এবং পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে নদী তীরবর্তী দখলদারদের উচ্ছেদ করার জন্য বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছে বিআইডব্লিউটিএ।
জানা গেছে, নসরুল হামিদের বাংলোবাড়ি উচ্ছেদ এ অভিযানে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ এটি শুধু একটি অবৈধ স্থাপনা নয়, বরং রাজনৈতিক ক্ষমতার ছায়ায় কীভাবে নদীর সম্পদ দখল হয়েছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে- আইনের শাসনের ঊর্ধ্বে কেউ নয় এবং পরিবেশ সংরক্ষণে প্রশাসন কোনো ছাড় দেবে না।
বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তারা জানান, শুধু বুড়িগঙ্গা নয় শীতলক্ষ্যা, তুরাগ এবং বালু নদীতেও একযোগে অবৈধ দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। নদীর সীমানা পিলার স্থাপন, ভরাট জমি পুনরুদ্ধার এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সবকিছুই একই প্রক্রিয়ার অংশ।
ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ এবং বালু নদীর সীমানা পিলার রক্ষা ও নদীর জায়গা দখলমুক্ত রাখতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। যত শক্তিশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানই হোক, নদীর জমি কেউ ব্যক্তিগতভাবে ভোগ করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন