আছাদুল ইসলাম, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

জয়পুরহাটে আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন, দামে খুশি চাষিরা

জয়পুরহাট শহরের নতুনহাটে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগাম জাতের আলু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি : কালবেলা
জয়পুরহাট শহরের নতুনহাটে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগাম জাতের আলু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ছবি : কালবেলা

আগাম জাতের আলু চাষ করে আশাতীত দাম পেয়ে এবার জয়পুরহাটের আলু চাষিরা বেজায় খুশি। চলতি মৌসুমে আলু বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, মজুরি, সেচ সবকিছু মিলিয়ে আলু উৎপাদনে খরচ বেড়েছে আলু চাষিদের। এবার ভালো দাম পাওয়ায় লোকসানের মুখে না পড়ায় কৃষকরা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছেন। প্রতি বিঘায় আলু উৎপাদনের খরচ বাদ দিয়ে এক বিঘা জমিতে কৃষকের লাভ হচ্ছে গড়ে ২৫-৩০ হাজার টাকা। জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে। বাজারে বেশি আলু আমদানি হলে এ দাম থাকবে না। কৃষকরা বলছেন, প্রথম দিকে দাম ভালো পাওয়া যায়।

জয়পুরহাট জেলায় দুই ধরনের জমিতে আলু চাষ হয়ে থাকে। আগাম জাতের আলু চাষ হয় জেলার বিভিন্ন গ্রামের ভিটে মাটির জমিতে। আর আমন ধান কাটার পর ব্যাপক হারে চাষ হয় এঁটেল ও দোঁআশ মাটির জমিতে। গত অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের আলু বীজ রোপণ মৌসুম শুরু হয়। ৬৫-৭০ দিনে আগাম জাতের এ আলুর ফলন হয় ৪৫-৫০ মণ প্রতি বিঘা জমিতে। তারপর জমি থেকে আলু তুলে হাটে বাজারে বিক্রি শুরু হয় আগাম আলু। আমন ধান কেটে নমলা জাতের (পরে লাগানো) আলুর উৎপাদন বিঘা প্রতি ৮০ মণ থেকে ১০০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে। দাম ভালো পাওয়ায় আগাম জাতের আলুতে কৃষককে লোকসানের মুখে পড়তে হয় না বললেই চলে।

জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলার পলি এলাকার সদর উপজেলার সাহাপুর, পালী, ভাদসা, মূহরুল, জামালপুর, দাদড়া, ধুলাতর, চান্দা, ক্ষেতলালের মহব্বতপুর, জিয়াপুর, আমিড়া, আক্কেলপুর উপজেলার পালসা, মাতাপুর, ইসমাইলপুর, রুকিন্দ্রীপুর, গভরপুর এবং পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম অংশে ভিটে মাটিতে আগাম জাতের আলু আবাদ হয়ে থাকে।

এ সব গ্রামের আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন, এমন একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এ আলু বীজ রোপণ করা হয়। আলুর জমি পরিচর্যা শেষে ৬০-৭০ দিন পর আলু তুলে বিক্রি শুরু হয়। নতুন এ আলুর চাহিদাও বেশ ভালো। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমে আলু উৎপাদনের খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত ভালো দাম পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না তাদের।

জয়পুরহাট শহরের নতুনহাটে আগাম জাতের লাল আলু বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন সদর উপজেলার ভাদসা গ্রামের কৃষক জামিল হোসেন। তিনি বলেন, আলুর ফলন এবার একটু কম। রোমনা জাতের আলু এক বিঘায় তিনি ৩২ মণ ফলন পেয়েছেন। ৩০ হাজার টাকা আলু চাষে খরচ হয়েছে। আজ হাটে ২ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে পাঁচ মণ আলু বিক্রি করলেন। খরচ বাদে ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। একই গ্রামের আলম হোসেন ক্যারেজ জাতের আলু ২ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেন। লাল জাতের আলুর ছোট বড় প্রকারভেদে ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ফলন একটু কম। তারপরও ভালো লাভ টিকবে। দিন দিন বাজারে আমদানি বাড়বে। তখন এ দাম থাকবে না।

বাজারে আলুর জাত ও ছোট বড় আলু হিসেবে খুচরা ৩০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। শহরের মাদ্রাসা পাড়া এলাকার আনিছুজ্জামান কাঁচাবাজার করতে এসে জানালেন কৃষক ভালো দাম পাচ্ছে এটা ঠিক। কিন্তু আমরা বাজারে এসে দাম নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছি। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাহেলা পারভীন বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেশি, উৎপাদন খরচ বেড়েছে এটা ঠিক। কিন্তু কৃষক দাম ভালো পাচ্ছে। এবার আলুতে লোকসান হবে না।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে ২ শ্রমিক নিহত

টঙ্গীতে উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ

আপনার মোবাইল দিয়েই করুন টাইফয়েড টিকার রেজিস্ট্রেশন

১৯ বছর ধরে একটি সেতুর অপেক্ষায় ২০ হাজার মানুষ

২০টি ভয়ংকর জে-১০ যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ, খরচ ২৭ হাজার কোটি

লবণের মাঠ ও চিংড়ি ঘের দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ

গাজাগামী ফ্লোটিলার ১৩০ কর্মীকে জর্ডানে পাঠাল ইসরায়েল

সাবের হোসেনের সঙ্গে যেসব বিষয়ে আলোচনা করেন ৩ রাষ্ট্রদূত

নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করতে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ চলছে : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের সূচিতে পরিবর্তন

১০

আবরার হত্যার বিচার করলেই আ.লীগ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত : চরমোনাই পীর

১১

ফুসফুস ক্যানসারের এই ৫ উপসর্গ সাধারণ অসুখ ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন না তো?

১২

ভৈরবে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পাদুকা খাতে উদ্ভাবন শীর্ষক আঞ্চলিক ক্যাম্পেইন

১৩

বিসিবিতে নতুন দায়িত্ব বণ্টন: কোন কমিটির নেতৃত্বে কে?

১৪

চট্টগ্রামে যুবদলের দুই নেতাকে বহিষ্কার

১৫

মানসিক ভারসাম্যহীন মা, ফুটফুটে কন্যা সন্তান পেল নতুন ঠিকানা

১৬

ট্রাম্পের ‘ডাক্তার দেখানো উচিত’ মন্তব্যে গ্রেটা থুনবার্গের পাল্টা জবাব

১৭

১৭ মাসে কোরআনে হাফেজ, উপহার পেল রাদিফ

১৮

তিন মাসে ৫০ দিন অনুপস্থিত মেডিকেল অফিসার

১৯

কমিউনিটি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন ঢাবির অধ্যাপক মোর্শেদ

২০
X