নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুরের জেরে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় মারপিটের ঘটনায় উভয়পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে।
আহতদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অপর ২ জন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ শেষে বাড়ি ফিরে গেছে।
আহতরা হলেন- রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫০) ও তার ভাই মাহাবুর হোসেন সুমন (৪৬), রাণীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক (৩১), রবিউল ইসলাম (৩৩), ফারুক হোসেন (৪৫), কাশিমপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মন্ডল (৪৭)। এছাড়া নৌকার সমর্থক-কর্মী রাজ (৩৯) ও বাদল হোসেন (৩৫) নামের অপর দুইজনও আহত হয়েছে।
রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও এমপি হেলালের ছেলে রাহিদ সরদার বলেন, শুরু থেকেই আমরা নৌকার পক্ষে শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে আসছি। কিন্তু রোববার রাতের কোনো একসময় আত্রাই উপজেলার সাহাগোলা ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের হাতিয়াপাড়া গ্রামে নৌকার নির্বাচনী অফিসে স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনরা হামলা করে চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের চারাপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের সময় উভয়পক্ষের কথাকাটির একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমন নৌকার সমর্থক বাদল হোসেন নামের এক কর্মীকে আঘাত করে। ফলে ওখানে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে কয়েকজন আহত হয়। অপরদিকে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আনোয়ার হোসেন নৌকা সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে উসকানিমূলক কথা বললে সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেন রাজ নামের নৌকা সমর্থককে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারির সৃষ্টি হয়।
আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক নাদিম হোসেন মুঠোফোনে জানান, সোমবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের লোক আজাহার বাউল নামের এক ব্যক্তি তাকে নৌকার পক্ষে কাজ না করার হুমকি দেয়। নৌকার পক্ষে কাজ করলে তাকে কেটে টুকরো টুকরো করার হুমকি প্রদান করে ওই আজাহার বাউল।
স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাড.ওমর ফারুক সুমন জানান, নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার লোকেরা তার প্রচার কাজে বাধার সৃষ্টি করে আসছে। তার লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান অব্যাহত রয়েছে। সোমবার বিকেলে তার স্ত্রী নির্বাচনী প্রচারের কাজে উপজেলার কাশিমপুর চারাপাড়া এলাকায় গেলে নৌকা প্রার্থীর লোকজনরা বাধা দিয়ে আটকে রাখে। আমি সেখানে গিয়ে স্ত্রীসহ অন্যদের উদ্ধার করার সময় নৌকার লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। ফলে কয়েকজন কর্মী-সমর্থক আহত হয়।
কাশিমপুর থানার ওসি আবু ওবায়েদ জানান, মারপিটের পৃথক পৃথক স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন