মিরাজ সিকদার, শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খেজুর গাছে রসের হাঁড়িতে তালা!

খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে তালা ঝুলিয়েছেন শরীয়তপুরের গাছি মো. হারুন সরদার। ছবি : কালবেলা
খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে তালা ঝুলিয়েছেন শরীয়তপুরের গাছি মো. হারুন সরদার। ছবি : কালবেলা

মানুষ তার সম্পদ নিরাপদে রাখতে ঘরবাড়ির গেটে, দোকানে বা ট্রাংকে তালা লাগায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রসের হাঁড়িতে তালা দেওয়ার কথা কেউ কোনোদিন শোনেননি। তবে এমনই অবাক করা ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে। দেখা যায় খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে ঝুলছে তালা।

গোসাইরহাট পৌরসভার মইসকান্দির গাছি মো. হারুন সরদার খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড় তৈরি ও কাঁচা রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। চলতি বছরে চোরেরা একাধিকবার রসের হাঁড়িসহ রস চুরি করে নিয়ে গেছে। এরপর হারুন সরদার ৮০ টাকায় তালা ও ১৫০ টাকায় শিকল কিনে রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন।

হারুন কালবেলাকে জানান, চলতি বছর শীতের এই মৌসুমে ১৭০টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে আসছেন। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রতিটি মাটির হাঁড়ি ৮০-১০০ টাকায় কিনতে হয়। এ থেকে প্রতিদিন ৩৫-৪০ হাঁড়ি রস সংগ্রহ করে। প্রতি হাঁড়ি (মাঝারি) কাঁচা রস ৩০০ টাকায় মানুষ তার বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায়। ২৭০ টাকায় প্রতি মণ লাকড়ি কিনে খেজুরের রস আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি গুড় তৈরি করে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।

তিনি আরও জানান, রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন তিনি। গাছ কেটে হাঁড়ি পাতার পরে গাছের গোড়ায় বড়ই কাটা ডাল সহ বেঁধে দেই তাতেও চোরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না। গতকাল রাতেও ৪৫টি গাছের হাড়ি রসসহ নামিয়ে ৪০টি হাঁড়ি রেখে গেছে আর পাঁচটি হাড়ি নিয়ে গেছে। তাই শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখি।

এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার উৎসুক জনতা তার রসের হাঁড়ি তালা মারা দেখতে খেজুর গাছের নিচে ভিড় জমান। এ রকম একজন ঢাকা থেকে আসা আরিফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আরিফ কখনো খেজুর গাছে হাড়ির সঙ্গে এভাবে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করতে দেখেননি।

তিনি বলেন, আমি এই পাশের এলাকায় বেড়াতে এসেছি। এই ঘটনাটা শুনে খুব উৎসাহ জেগেছিল। তাই আজ দুপুর থেকে ওনার গাছ কাটা দেখছি সঙ্গে। দেখে খুব ভালো লাগল।

এক পথচারী সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এই শীতের মধ্যে এত কষ্ট করে গাছ কাটে, হাঁড়িপাতে আবার ভোর হলে এই হাঁড়ি রসসহ নামায়। তা বিক্রি করে দু-চার টাকা হয়। যা দিয়ে হারুন ভাইয়ের সংসার চলে। চরে যদি চুরি করে রস খেয়ে যায় তাতে তো সমস্যা নেই। কিন্তু হাঁড়ি নিয়ে যায়, ভেঙে ফেলে এসব মানা যায় না। আসলে এদের বিষয় বলার কিছু নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আইপিএল থেকে নাম সরিয়ে নিলেন দুই তারকা ক্রিকেটার

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়ার মরদেহ 

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গোপালগঞ্জে

জানাজার জন্য খুলে দেওয়া হলো দক্ষিণ প্লাজার প্রবেশ পথ

রাজধানীতে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার

নতুন বছরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ লাগতে পারে

আমরা হারিয়ে যাব একদিন; আরশ খানের আবেগঘন পোস্ট

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শীত

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গ্রেপ্তার

রাজধানীতে ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

১০

মায়ের কফিনের পাশে কোরআন তেলাওয়াত করছেন তারেক রহমান

১১

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু

১২

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক শুরু

১৩

টঙ্গীতে জুবায়েরপন্থিদের জোড় ও বিশ্ব ইজতেমা না করার নির্দেশ

১৪

নতুন বছরে কলেজে কতদিন ছুটি জানিয়ে দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

১৫

ইয়েমেনে উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগে মুখ খুলল আমিরাত

১৬

বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল অস্ট্রেলিয়া-শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ

১৭

নতুন বছর বরণে রণবীর-দীপিকা থেকে বিজয়-রাশমিকা—কে কোথায়?

১৮

খালেদা জিয়ার মরদেহ গুলশানে তারেক রহমানের বাসায়

১৯

বিপিএলের স্থগিত ম্যাচের সূচি আবারও পরিবর্তন

২০
X