বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
মিরাজ সিকদার, শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

খেজুর গাছে রসের হাঁড়িতে তালা!

খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে তালা ঝুলিয়েছেন শরীয়তপুরের গাছি মো. হারুন সরদার। ছবি : কালবেলা
খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে তালা ঝুলিয়েছেন শরীয়তপুরের গাছি মো. হারুন সরদার। ছবি : কালবেলা

মানুষ তার সম্পদ নিরাপদে রাখতে ঘরবাড়ির গেটে, দোকানে বা ট্রাংকে তালা লাগায় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রসের হাঁড়িতে তালা দেওয়ার কথা কেউ কোনোদিন শোনেননি। তবে এমনই অবাক করা ঘটনা ঘটেছে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে। দেখা যায় খেজুর গাছের রসের হাঁড়িতে ঝুলছে তালা।

গোসাইরহাট পৌরসভার মইসকান্দির গাছি মো. হারুন সরদার খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে তা দিয়ে গুড় তৈরি ও কাঁচা রস বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। চলতি বছরে চোরেরা একাধিকবার রসের হাঁড়িসহ রস চুরি করে নিয়ে গেছে। এরপর হারুন সরদার ৮০ টাকায় তালা ও ১৫০ টাকায় শিকল কিনে রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন।

হারুন কালবেলাকে জানান, চলতি বছর শীতের এই মৌসুমে ১৭০টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে আসছেন। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য প্রতিটি মাটির হাঁড়ি ৮০-১০০ টাকায় কিনতে হয়। এ থেকে প্রতিদিন ৩৫-৪০ হাঁড়ি রস সংগ্রহ করে। প্রতি হাঁড়ি (মাঝারি) কাঁচা রস ৩০০ টাকায় মানুষ তার বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায়। ২৭০ টাকায় প্রতি মণ লাকড়ি কিনে খেজুরের রস আগুনে পুড়িয়ে খাঁটি গুড় তৈরি করে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন।

তিনি আরও জানান, রস ও হাঁড়ি নিরাপদে রাখতে খেজুর গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখেন তিনি। গাছ কেটে হাঁড়ি পাতার পরে গাছের গোড়ায় বড়ই কাটা ডাল সহ বেঁধে দেই তাতেও চোরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় না। গতকাল রাতেও ৪৫টি গাছের হাড়ি রসসহ নামিয়ে ৪০টি হাঁড়ি রেখে গেছে আর পাঁচটি হাড়ি নিয়ে গেছে। তাই শিকল দিয়ে তালা মেরে রাখি।

এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার উৎসুক জনতা তার রসের হাঁড়ি তালা মারা দেখতে খেজুর গাছের নিচে ভিড় জমান। এ রকম একজন ঢাকা থেকে আসা আরিফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আরিফ কখনো খেজুর গাছে হাড়ির সঙ্গে এভাবে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করতে দেখেননি।

তিনি বলেন, আমি এই পাশের এলাকায় বেড়াতে এসেছি। এই ঘটনাটা শুনে খুব উৎসাহ জেগেছিল। তাই আজ দুপুর থেকে ওনার গাছ কাটা দেখছি সঙ্গে। দেখে খুব ভালো লাগল।

এক পথচারী সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এই শীতের মধ্যে এত কষ্ট করে গাছ কাটে, হাঁড়িপাতে আবার ভোর হলে এই হাঁড়ি রসসহ নামায়। তা বিক্রি করে দু-চার টাকা হয়। যা দিয়ে হারুন ভাইয়ের সংসার চলে। চরে যদি চুরি করে রস খেয়ে যায় তাতে তো সমস্যা নেই। কিন্তু হাঁড়ি নিয়ে যায়, ভেঙে ফেলে এসব মানা যায় না। আসলে এদের বিষয় বলার কিছু নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যাংকক থেকে আজ দেশে ফিরছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ

প্রকৌশলীদের উন্নয়ন ও সংস্কার নিয়ে আইইবি’র মতবিনিময় সভা 

সৈয়দপুরে শাটল বাস সার্ভিস চালু করল বিমান

প্রকৌশলীদের অধিকার আদায়ে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সার্জেন্ট হেলালের সাহসিকতায় ২ ছিনতাইকারী আটক

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ‘মহান মে দিবস’ আজ

নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, প্রশাসনের সতর্কতা

রাজধানী থেকে পুরনো যানবাহন সরাতে অ্যাকশনে নামছে বিআরটিএ

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনওকে বদলি

ববি প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা

১০

স্কুলের ১৮টি গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

১১

শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েতে কুকুর, ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে চিঠি

১২

আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে কুপিয়ে হত্যা

১৩

বাবরি মসজিদ বানাবেন পাকিস্তানি সেনারা : পাকিস্তানের সিনেটর

১৪

কাশ্মীর হামলার পর চাপে ভারতের মুসলিমরা, বেড়েছে দমনপীড়ন

১৫

ছাত্রদের ক্ষমতায় এনে দেশের ক্ষতি করা হয়েছে : সোহেল

১৬

সন্ধ্যা নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৭

মে মাসে হতে পারে ২টি ঘূর্ণিঝড়

১৮

শ্রমিক সমাবেশে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

১৯

ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা ইসরায়েলে

২০
X