শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মো. ইয়াছিন আলীর (৩০) খোঁজ মিলেছে। গত তিন দিন তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে তিনি বাড়ি ফেরেন। তারপর থেকেই তিনি অচেতন অবস্থায় আছেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে তিনি অবচেতন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এর আগে গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে জীবননগর উপজেলার হরিহরনগর নিজ বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন তিনি। গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রাখাল ভোগা গ্রামের মাঠের মধ্যে নিখোঁজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে মহেশপুর থানা পুলিশ।
নিখোঁজ ইয়াছিন আলী জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের খালপাড়ার মো. হানেফ আলীর ছেলে। সে হরিহরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি হিসেবে চাকরি করেন।
নিখোঁজ ইয়াছিন আলীর মা বলেন, রোববার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে ইয়াছিন একবার মা বলে আমাকে ডাক দেয়। আমরা তাড়াহুড়ো করে বাইরে বের হয়ে দেখি ইয়াছিন দরজার গোড়ায়। তাকে ধরাধরি করে বাড়ির মধ্যে নিয়ে আসি। সেই থেকে সে অচেতন, কোনো কথাবার্তা বলছে না। সকালে হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। সে একা বাড়ি ফেরেনি তবে কে বা কারা রেখে গিয়েছে আমরা তা দেখিনি।
তিনি আরও বলেন, গত শুক্রবার বিকেলে ইয়াছিন তার দুমাস বয়সী ছেলেকে দেখতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে সেখানে না পৌঁছালে তখন তারা আমাদের জানান। তারপর থেকে ইয়াছিনের মোবাইলে অনেক বার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে আমরা সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। কোথাও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। শনিবার সন্ধ্যার দিকে ইয়াছিনের মোটরসাইকেলটি রাখাল ভোগা মাঠের মধ্যে পাওয়া যায়।
জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. ইয়াছিন আরাফাত বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইয়াছিন আলীকে আনা হয়। প্রথমে তাকে দেখে মনে হয়েছিল ঘুম ঘুম ভাব। তার পাল্স, ব্লাডপ্রেশার সবকিছু নরমাল পেয়েছি। এখন পর্যন্ত তিনি কথা বলেনি। আমরা তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য ভর্তি করে রেখেছি। এখন সবকিছুই স্বাভাবিক আছে।
জীবননগর থানার ওসি এসএম জাবীদ হাসান বলেন, নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার সকালে সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তিনি ঢাকায় গিয়েছিলেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের জানান। তবে কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তিনি সুস্থ হলে আমরা বিষয়টি জানতে পারব। তবে তিনি আদৌ ঢাকায় গিয়েছিলেন কিনা বা অন্য কোনো ঘটনা চাপা দিচ্ছে তা আমরা জানা চেষ্টা করছি।
মন্তব্য করুন