চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দুর্নীতি প্রতিরোধে সচেতন নাগরিক কমিটির ৬ দাবি

‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার : নাগরিক ভাবনা’ স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সনাক আঞ্চলিক সম্মেলন। ছবি : কালবেলা
‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার : নাগরিক ভাবনা’ স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সনাক আঞ্চলিক সম্মেলন। ছবি : কালবেলা

দুর্নীতি প্রতিরোধে ৬ দফা দাবি জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) অনুপ্রেরণায় গঠিত নাগরিকদের দুর্নীতিবিরোধী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্যরা।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) ‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার : নাগরিক ভাবনা’ স্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সনাক আঞ্চলিক সম্মেলনে উপস্থিত সদস্যরা এ দাবি জানান।

দাবিগুলো হলো – রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ, সরকারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার চর্চা, ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং অর্থপাচার রোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।

চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ১০টি সনাকের শতাধিক সদস্যের উপস্থিতিতে দুই দিনব্যাপী দুর্নীতিবিরোধী এই আঞ্চলিক সনাক সম্মেলন শনিবার শেষ হয়েছে। সম্মেলনে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- টিআইবির সাধারণ পর্ষদে সনাক প্রতিনিধি ও সনাক কুমিল্লার সদস্য বদরুল হুদা জেনু, সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী এবং টিআইবির সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস।

সম্মেলনে সনাক চট্টগ্রাম মহানগর, পটিয়া, চকরিয়া, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং মুন্সীগঞ্জ এর প্রতিনিধিগণ ‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার ও দুুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন : নাগরিক ভাবনা’ এবং ‘টিআইবি’র চলমান কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ বিষয়ে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন সফল করতে করণীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির কারণে আমাদের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, দুর্নীতি না হলে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হতে পারত। বিশ্বে যে সকল দেশ অর্থ পাচারের শীর্ষে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। এক শ্রেণির মানুষ অর্থপাচার করলেও তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয় না। যদি অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণ করা যেত তাহলে বছরে দেশের ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থ রক্ষা করা হতো। নিম্ন আয়ের মানুষের কাঁধে বিত্তশালীদের ঋণের বোঝা, অথচ ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই ঘুষ না দিলে মানুষ যথাযথভাবে সেবা পায় না।

তিনি আরও বলেন, সেবা প্রদানের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। জাতীয় সংসদকে আরও কার্যকর করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সরকারের সংস্থাগুলোকে দুর্নীতি প্রতিরোধে একসাথে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা। বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ বা প্রয়োজনে নতুন আইনি কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে সচেতন ও সোচ্চার হতে হবে।

‘দুর্নীতি, দারিদ্র্য, অবিচার : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনায় সনাক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া, সনাক চকরিয়ার সদস্য ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, সনাক চাঁদপুরের সভাপতি ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, সনাক পটিয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট কবি শেখর নাথ পিন্টু, সনাক কুমিল্লার সদস্য মাসুক আলতাফ চৌধুরী, সনাক খাগড়াছড়ির সদস্য এমএ মর্তুজা পলাশ, সনাক লক্ষ্মীপুরের সভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকী, সনাক মুন্সীগঞ্জের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান, সনাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম এবং সনাক রাঙ্গামাটির সদস্য অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সনাক মুন্সিগঞ্জের সদস্য শাহনাজ বেগম, চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য জেসমিন সুলতানা পারু, সনাক কুমিল্লার সদস্য সেলিনা আক্তার প্রমুখ।

দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা এবং চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সঞ্জয় বিশ্বাস, সনাক চকরিয়ার সহসভাপতি রনেন্দু বিকাশ দে, সনাক চাঁদপুরের সদস্য কাজী শাহাদাত, সনাক পটিয়ার সদস্য এসএমএকে জাহাঙ্গীর, সনাক কুমিল্লার সভাপতি রোকেয়া বেগম শেফালী, সনাক খাগড়াছড়ির সভাপতি শেফালীকা ত্রিপুরা, সনাক লক্ষ্মীপুরের সদস্য প্রফেসর মো. রফিকুল আহসান, সনাক মুন্সীগঞ্জের সদস্য শুভংকর বিশ্বাস, সনাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি আবদুন নূর এবং সনাক রাঙ্গামাটির সদস্য নিরুপা দেওয়ান প্রমুখ।

এ ছাড়া সম্মেলনের এ পর্বে সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অ্যাকটিভ সিটিজেন্স গ্রুপের ৬ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসিত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বক্তারা দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাতে খাবার বন্ধ করলে ওজন কমে কি

জুলাই সনদ স্বাক্ষর নিয়ে নাহিদের প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল নেতাকর্মীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে : মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

শনিবার খোলা থাকবে ব্যাংক

পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতি, বাধা দেওয়ায় বৃদ্ধাকে হত্যা

জামাইয়ের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই শ্বশুরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

সীমান্তে নারী-শিশুসহ ১১ অনুপ্রবেশকারী আটক

ভারতে পালানোর সময় দুই আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

বর্ণাঢ্য আয়োজনে পঞ্চগড়ে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

নামাজ শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন সোহেল, ঘরে ঢুকে মাথায় গুলি

১০

প্রতিদিন মদ খেলে মস্তিষ্কে যা ঘটে জানাচ্ছে গবেষণা

১১

আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম : প্রধান উপদেষ্টা

১২

জঙ্গলে বিমান বিধ্বস্ত, সবাই নিহত

১৩

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যায়নি যেসব দল

১৪

কালবেলা পাঠকদের কাছে আস্থা অর্জন করতে পেরেছে : টুকু

১৫

সাতক্ষীরার তিন কলেজে পাস করেনি কেউ

১৬

রুই মাছের ৮ পদ, আজই বানিয়ে ফেলুন আপনার পছন্দের রেসিপিটি

১৭

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার প্রদর্শনী / ‘দেশ বিনির্মাণে তারেক রহমানের পরিকল্পনা সবার কাছে পৌঁছে দেব’

১৮

কী বলা হয়েছে জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায়

১৯

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেন যারা

২০
X