দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার দক্ষিণ গাড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এক বছরেও পায়নি দুই বিষয়ের পাঠ্যবই। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার এমপিওভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দশম শ্রেণির ১৩ শিক্ষার্থী বাংলা দ্বিতীয় পত্র ও কৃষি শিক্ষা পাঠ্যবই হাতে পায়নি।
বই ও গাইড কিনে পড়ালেখা করে মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে পরীক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সচেতন মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দশম শ্রেণির কয়েক শিক্ষার্থী ঘটনাটি নিশ্চিত করে কালবেলাকে বলে, প্রধান শিক্ষককে এই দুটি বইয়ের কথা বলতে গেলে তিনি ধমক দিয়ে বলেন, বই আছে বের করতে সময় লাগবে। সেই সময়েই নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উঠলাম কিন্তু আজও বই পেলাম না। বাধ্য হয়েই গাইড বই ও অন্য স্কুলের বন্ধুদের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ালেখা করতেছি।
ডন চন্দ্র রায় নামে এক অভিভাবক কালবেলাকে বলেন, নবম থেকে দশম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীরা উঠল কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা বই দুইটা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা কীভাবে পড়বে? ১ বছর শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হয়ে গেল। শিক্ষকদের এমন উদাসীনতা আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও নজরদারি প্রয়োজন।
এ বিষয়ে দক্ষিণ গাড়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন রায় মুঠোফোনে কালবেলাকে বলেন, বই নেই, নিতে হবে। বই খুঁজতে হবে। গোডাউনে আছে মনে হয়, না হলে পুরাতন বই দেব। বই ছাড়া শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা কীভাবে নিয়েছেন- এমন প্রশ্ন প্রধান শিক্ষক এড়িয়ে যান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মঞ্জুরুল হক কালবেলাকে বলেন, এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। এক বছরে তারা বই পাবে না, এটা তো দুঃখজনক বিষয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত বই প্রদান করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। দ্রুত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বই প্রদানে গাফিলতি থাকলে জড়িতদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের এসএসসি পরীক্ষায় এই বিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষার্থী মানবিক বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করে ৫ জন উত্তীর্ণ হয়। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অধিকাংশ শিক্ষক স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় এমন বেহাল দশা বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
মন্তব্য করুন