মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় কুয়াশার দাপট আর হিম হাওয়ায় অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত। গত কয়েক দিন ধরে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তাতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে পুরো শ্রীমঙ্গল।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) ৯টায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছিল শ্রীমঙ্গলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস।
শ্রীমঙ্গলে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন দেশের পুরো শ্রীমঙ্গলে। বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। হিম বাতাসে ঝরছে শীতের পারদ। ঘন কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
স্থানীয়রা জানান, তীব্র শীতের কারণে বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের কিছু কিছু মানুষ প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে সময়মতো কাজে বের হতে পারছেন না। কিন্তু তবুও জীবিকার তাগিদে এ ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই মাঠে কাজ করতে দেখা গেছে অনেককে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথ। গাছের পাতা, ফসলের ক্ষেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশির বিন্দু। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটছে কর্মজীবী মানুষরা। শীতের কারণে জেলায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন লোকজন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষজন অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বোরো ধানের বীজতলার চারা বিবর্ণ হয়ে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করছে। চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশা বীজতলার জন্য হুমকি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে ৬ টায় ৮.৫ ডিগ্রি এবং ৯টায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ তাপমাত্রা রেকর্ডে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। গত কয়েক দিন থেকেই এ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। কুয়াশা ও হিম বাতাসের কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। জানুয়ারির শেষের দিকে শীত আরও বাড়তে পারে।
মন্তব্য করুন