নওগাঁর নিয়ামতপুরে বিরূপ আবহাওয়ায় সরিষার গাছে ও পডে পচন ধরেছে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত কুয়াশায় পড নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সরিষার ফলন ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
এতে সরিষার উৎপাদন খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হবে বলে ধারণা করছেন অনেক কৃষক। অন্যদিকে স্থানীয় বাজারগুলোতে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় সরিষার ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।
উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৭৬৫ হেক্টর। উপজেলায় এবার সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৭২০ টন। চলতি অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার ৭৬০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের চকসিতা গ্রামের সরিষা চাষি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুই বিঘা জমিতে স্থানীয় জাতের সরিষার আবাদ করেছি। বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ৪ মন। এখন বাজারে সরিষার দাম প্রকারভেদে ২০০০-২৩০০ টাকা। প্রতি বিঘায় উৎপাদন খরচ খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা।
আরেক সরিষা চাষি মুনসের আলী বলেন, বাজারে যেভাবে সার-কীটনাশকের দাম বেড়েছে এতে উৎপাদন খরচ জোগাতে আমাদের এখন হিমশিম খেতে হবে। এবার অতিরিক্ত ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে সরিষা ক্ষেতে পচন ধরেছে। আবার সরিষার পড নষ্ট হয়ে গেছে। গত বছরের চেয়ে এবার সরিষার উৎপাদন কম হবে। গত বছর বাজারে সরিষার দাম প্রকারভেদে মনপ্রতি ৩০০০-৩৫০০ টাকা ছিল। এবার প্রকারভেদে বাজারে ২০০০-২৫০০ টাকা মন দরে সরিষা বিক্রি হচ্ছে।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শামসুদ্দোহা বলেন, চলতি মৌসুমে তীব্র শীত ও অতিরিক্ত কুয়াশায় সরিষার পড অনেক নষ্ট হয়েছে। এতে কিছু কিছু চাষি ফলন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেও তেমন একটা ক্ষতি হবে না বলেই মনে করছি। দেশি তেলের ব্যবহার বাড়ায় এবারও বাজারে নতুন সরিষার দাম ভালোই হবে।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষা আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং বাজারে সরিষার দামও ভালো পাবেন কৃষকেরা বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন