কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
অনলাইন সংস্করণ

অজানা ভাইরাসে ২ মেয়ের মৃত্যুর পর আইসোলেশনে বাবা-মা

দুই বোন মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়া। ছবি : সংগৃহীত
দুই বোন মুনতাহা মারিশা ও মুফতাউল মাশিয়া। ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহীতে অজানা এক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই বোনের মৃত্যুর পর এবার তাদের বাবা-মাকেও আইসোলেশন রাখা হয়েছে। গৃহকর্মীর আনা গাছ থেকে পাড়া বরই খাওয়ার পর অসুস্থ হয় দুই বোন। চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, গাছ থেকে পাড়া বরই না ধুয়ে খাওয়ায় তাদের শরীরে নিপাহ ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। আর এতেই তাদের মৃত্যু হতে পারে।

দুই বোন মুনতাহা মারিশা (২), মুফতাউল মাশিয়া (৫)। তাদের বাবা মনজুর রহমান (৩৫) রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। মা পলি খাতুন (৩০) গৃহিনী।

এই দুই শিশুর বাবার বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে তারা রাজশাহীর চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন।

রামেক হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের আইসোলেশন সেন্টারে থাকা মনজুর রহমান ও তার স্ত্রী পলি খাতুন জানান, গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কোয়ার্টারের কাজের বুয়া কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ থেকে বরই কুড়িয়ে এনে দুই মেয়েকে খেতে দিয়েছিলেন। না ধুয়েই ওই বরই খেয়েছিল মারিশা আর মাশিয়া। এর পরদিন বুধবার দুপুরে ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে। এরপর পর শুরু হয় বমি। তখন মেয়েকে নিয়ে তারা একটি মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর সিএমএইচ হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। মাইক্রোবাসেও মারিশা বুকের দুধ খায়। শহরে ঢোকার আগে কাটাখালী এলাকায় মায়ের বুকেই মারিশা মারা যায়। সিএমএইচে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, সে মারা গেছে। এরপর গ্রামের বাড়ি দুর্গাপুরে নিয়ে মরদেহ দাফন করা হয়।

এরপর শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুর্গাপুরের বাড়িতে মাশিয়ারও জ্বর আসে। শুরু হয় বমি। দ্রুতই তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রাজশাহীতে সিএমএইচে নেওয়া হয়। রাতে মাশিয়ারও পুরো শরীরে ছোটো ছোটো কাল দাগ উঠতে শুরু করে। তা দেখে সিএমএইচের চিকিৎসকেরা মাশিয়াকে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ৯টায় তাকে রামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে দ্রুতই আইসিইউতে ভর্তি করান। পরদিন শনিবার বিকেলে মাশিয়াও মারা যায়।

রামেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বাচ্চা দুটি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও তাদের বাবা-মা জানিয়েছেন, তারা খেজুর রস খায়নি। তবে না ধুয়ে বরই খেয়েছিল। এটা থেকে নিপাহ ভাইরাস হতে পারে, আবার অন্য কোনো ভাইরাসও হতে পারে। সেটা আসলেই কী তা জানতে হাসপাতালে মারা যাওয়া মারিশা আর তার বাবা-মায়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রোববার রিপোর্ট পেয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে শনিবার বিকেলে স্বজনদের মাধ্যমে মাশিয়ার মরদেহ বাড়িতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যার পরে দুর্গাপুর উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে মরদেহ দাফন করা হয়। গত বুধবার রাতে ছোট মেয়ে মারিশাকেও একই জায়গায় দাফন করা হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডিবি হেফাজতে সন্দেহভাজন আসামির মৃত্যু, পুলিশের দাবি ‘শ্বাসকষ্ট’

পিরিয়ডে পেটব্যথা, কমবে ভেষজ চায়ে

জামায়াত ফ্যাসিবাদবিরোধী দৃশ্যমান কিছুই করেনি : মির্জা ফখরুল

সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত: ইসি সানাউল্লাহ

সাকিবকে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়লেন তাইজুল

কারিশমার সাবেক স্বামীর সম্পত্তি নিয়ে নতুন বিতর্ক

ফের ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল বাইপাইল

ইনিংস ঘোষণা বাংলাদেশের, জিততে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে হবে আয়ারল্যান্ডকে

জেলেনস্কিকে আলটিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

পূর্ববিরোধে থেমে গেল জীবনের প্রাণ 

১০

সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ জানালেন মিথিলা

১১

সন্দেহ-অবিশ্বাসে দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয় : রিজওয়ানা

১২

পুরান ঢাকার অধিকাংশ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ : রাজউক চেয়ারম্যান

১৩

অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ দিচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ

১৪

এসএমসিতে পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ

১৫

দেশে ফের ভূমিকম্প

১৬

৪৯১ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ

১৭

যুবদল নেতা বহিষ্কার

১৮

টেরিটরি সেলস ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ট্রান্সকম

১৯

জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা 

২০
X