বৈদ্যুতিক খুঁটি ধসে সেতুদের বাড়িতে পড়ে। এতে শর্টসার্কিটে বিদ্যুতায়িত হয় তাদের ঘর। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই রান্নার কড়াইয়ে থাকা গরম তেল পড়ে ঝলসে যায় ৯ বছরের শিশুটির মুখ। কয়েক সপ্তাহ আগের এই ঘটনায় বাড়িতে ডুকরে কাঁদছে সেতু। কারণ, তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য পরিবারটির নেই।
সেতুদের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউপির সীমান্তবর্তী কমলপুর গ্রামে। সেতুর মা রওশন আরা স্বামী পরিত্যক্তা নারী। পেশায় তিনি গার্মেন্টকর্মী। দিনে এনে দিনে খেয়ে জীবন চলছে।
এদিকে দিন দিন সেতুর মুখের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। বিকৃত হয়ে যাচ্ছে চেহারা। সে আগের মতো খেলতে পারছে না। স্কুলে যেতে পারছে না। সহপাঠীরা তাকে দেখলেই আজেবাজে কথা বলে। সে সঙ্গে শরীরের তীব্র যন্ত্রণা চুপ করে সহ্য করতে হচ্ছে তাকে।
তার মা জানান, মুদির দোকানে অনেক বকেয়া হয়ে গেছে। এখন দোকানি বাকি দিতে চাইছে না। পরের বেলায় কী খাবেন তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। পেট যেখানে সইছে না সেখানে মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে ভাবার সময় কই!
আশার কথা হলো, মাধবপুরের ইউএনও একেএম ফয়সাল ফোন দিয়ে পরিবারটির খোঁজখবর নিয়েছেন। ইউএনও সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন। এতে কিছুটা স্বস্তির মুখ দেখছেন শিশুটির মা রওশন আরা। ইউএনওর সহযোগিতার আশ্বাস বাস্তবায়নের অপেক্ষায় দিন গুণছেন তিনি।
মা জানান, আর্থিক সাহায্য চেয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে অনলাইনে আবেদন করেছেন। কিন্তু সেতুর দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। এ জন্য সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা দরকার।
মাধবপুরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পেয়ারা বেগম বলেন, শিশুটি অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছে। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা থাকবে। এখানে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও বিশিষ্টজনদেরও শিশুটির পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে দায়িত্ব রয়েছে।
মন্তব্য করুন