আওয়াজ করলেই মেরে ফেলব। সিন্দুক, আলমারির চাবি কোথায় আছে দিয়ে দে। তখন বাজে রাত ৩টা। দরজা ভেঙে ১২ জন কালো মুখোশধারী ডাকাত মিরাশানী গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় অস্ত্র নিয়ে তারা বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার বাড়িতে এমনভাবে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ভোররাতে দোতলা বাড়ির নিচতলায় জানালার গ্রিল কেটে ১২ সদস্যের অস্ত্রধারী ডাকাত দল ভেতরে প্রবেশ করে। সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে আলমারি থেকে সাত ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ চার লাখ টাকা নিয়ে চলে যায়। সকালে খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে ভিড় করেন এবং পুরো বাড়ি উলটপালট দেখতে পাই।
এ বিষয়ে ইয়াকুব মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন, রাত পৌনে ৩টার দিকে শব্দ পেয়ে আমি জেগে উঠি। এর মধ্যে আমার মা আমাকে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খোলামাত্রই মুখে কালো কাপড় বাঁধা কিছু লোক লম্বা ছুরি দেখিয়ে বলে, চিৎকার করলে শেষ। পরে তারা আমার ঘরে ঢুকে আলমারি, বিছানাপত্র তছনছ এবং লকারগুলো ভেঙে মূল্যবান সবকিছু নিয়ে যায়। তারা আমাকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে রাখে।
এলাকাবাসী জানান, শুধু ইয়াকুব মিয়ার বাড়িই নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা।
নিয়মিত চুরির ঘটনায় বিভিন্ন আলামত থাকার পরও চোর শনাক্ত করতে পারছে না পুলিশ। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টেন্ডার চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, চুরি, ছিনতাই, টিকিট কালোবাজারির জয়জয়কার ছিল। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তা কঠোর হাতে প্রতিহত করেছিলাম। সম্প্রতি নির্বাচনের কয়েকদিন আগ থেকে চোর এবং ছিনতাইকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। চেষ্টা চালাচ্ছি সেগুলোর মূল হোতা খুঁজে বের করে একবারে প্রতিহত করার জন্য।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ওসি আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি অল্প কিছুদিন হয়েছে এখানে জয়েন করেছি। আগের পরিস্থিতি আমার অজানা। সম্প্রতি অনেকগুলো চুরির এবং ৩টি ডাকাতির অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টহল পুলিশের বিষয়েও আমরা জোরদারি চালাব।
প্রসঙ্গত, বিজয়নগরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে অপরাধ প্রবণতা। স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধিসহ অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন