পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বজনদের বাঁচিয়ে নিথর দেহে বাড়ি ফিরলেন এশা

ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত তানজিনা নওরিন এশা। ছবি : কালবেলা
ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত তানজিনা নওরিন এশা। ছবি : কালবেলা

ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিজের সন্তান ও স্বজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধোঁয়ার কুন্ডুলিতে হারিয়ে গেলেন পিরোজপুরের তানজিনা নওরিন এশা। মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন এই এশা। মা জানতেন না তার কলিজার ধন লাশবাহী গাড়িতে ফিরেছে।

লাশ যখন পিরোজপুরের মাতৃসদন সড়কে এশার খালার বাড়ি এসে পৌঁছায় তখন স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মা যেন কাঁদতেও ভুলে গেছেন। এভাবে খালার বাড়ি থেকে নিথর এশাকে বিদায় দেন শহরের নড়াইলপাড়ায় শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। বিকেলে আসর নামাজের পর পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করেন স্বজনেরা।

ছেলে আরহামের বিরিয়ানি খাওয়ার আবদার পালন করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হন এশা। এ সময় তার সঙ্গে খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী লামিয়া ইসলাম ও তার দুই সন্তান ছিল। আগুন লাগার পর এশা তার সন্তান আরহামকে ভাবি লামিয়ার দুই সন্তানসহ বের হওয়ার জন্য আগে যেতে বলে। একটু পেছনেই ছিল এশা। এ সময় লামিয়া তার সন্তান ও আরহামকে নিয়ে বের হয়ে যেতে পারলেও হঠাৎ একটা বিস্ফোরণ হয়। ধোঁয়ার কুণ্ডুলিতে পথ হারিয়ে আর বের হতে পারেননি এশা। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন স্বজনরা। কোথাও না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটের মর্গে এশার লাশ শনাক্ত করেন স্বজনরা।

তানজিনা নওরিন এশা ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। এশার মা অনেক কষ্টে স্বামী ছাড়াই মেয়েকে যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন। একমাত্র মেয়েই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান এবং স্বপ্ন। চার দেয়ালের ভেতরে একরকম বন্দি জীবন বেছে নিয়ে ভাইবোনের সহযোগিতায় মেয়েকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছেন। পাত্রস্থ করেছেন জেলার স্বনামধন্য পরিবারে।

এশার শ্বশুর সাবেক কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন। স্বামী নাদিম আহমেদের সঙ্গে এশার বিয়ে হয় ৮ বছর আগে। পরে তাদের কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে সন্তান আরহাম আহমেদ (৬)।

ছেলের স্বাদ পূরণ করতে গিয়েই ছেলে এবং অন্য স্বজনদের বাঁচিয়ে নিজেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে পরপারে যাত্রা করলেন এশা। লাশবাহী গাড়ি নিয়ে স্বামী নাদিম আহমেদ ও তার পরিবারের লোকজন পিরোজপুরে পৌঁছায় শুক্রবার দুপুরে।

এ খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। লোকের মুখে মুখে একটি শব্দ- আহারে মেয়েটি কত ভালো ছিল। ছোটবেলা থেকেই ভদ্র, বিনয়ী এবং আদর্শিক জীবনযাপনের কারণে এশা সবার স্নেহের পাত্রী ছিল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজীপুরে দিনে ভাঙছে ৩০ সংসার

কে জিতবেন নোবেল শান্তি পুরস্কার

ইরানের সঙ্গে যোগসাজশ / ইরাকের অলিম্পিক কমিটির প্রধানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

বিদায় নিচ্ছে মৌসুমি বায়ু, ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

ছাদে টিকটক করার সময় বিদ্যুতায়িত মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু

ভিন্নরূপে শাকিব খান

তামা না পিতল, প্রতিদিনের ব্যবহারে কোন বাসনটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?

‘ট্রাম্প নোবেল না পেলে যে কোনো কিছু করতে পারেন’

শিশু শান্তি ‘নোবেল’ পুরস্কারে মনোনীত সাতক্ষীরার সুদীপ্ত

এই ৪ ভুল করছেন? তাহলে নিজেই ত্বকের ক্ষতি ডেকে আনছেন

১০

শিশুকে হত্যার পর ৭০ ফুট গাছের ওপর ওঠেও রক্ষা পেল না যুবক

১১

মাত্র ১৫০ টাকা খরচ করে ঘরে বসেই সুগন্ধি পারফিউম তৈরি করবেন যেভাবে

১২

ধর্ম অবমাননায় সমান শাস্তির বিধান চায় জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোট

১৩

শান্তিতে নোবেল ঘোষণার আগে ওবামাকে নিয়ে ট্রাম্পের ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য

১৪

অতিরিক্ত মাথাব্যথা কি ব্রেন টিউমারের লক্ষণ?

১৫

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের সম্ভাব্য একাদশ

১৬

সড়কে উঠতে বাধা, ট্রাফিক পুলিশের মাথা ফাটালেন অটোরিকশা চালক

১৭

টানা ৩ দিন ৪ ঘণ্টার কম ঘুমালে কী হতে পারে, জানেন?

১৮

ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের কাছে মাঠে প্রমাণ চাইলেন আনচেলত্তি

১৯

হংকং ম্যাচে হারের পর যা বললেন হামজা

২০
X