চট্টগ্রামে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকাকালে আবু বক্কর সিদ্দিক নামের এক ফ্রিল্যান্সারের ব্যাংক অ্যাক্যাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাওয়া তিন কোটি টাকার সন্ধান এখনো মিলেনি। পুলিশের হেফাজতে থাকাকালে বিপুল পরিমাণ টাকা গেল কোথায়, সেই বিষয়টি এখনো রয়ে গেছে ধোঁয়াশার মধ্যে। বরং ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার পর এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক নামের ওই ফ্রিল্যান্সার। ঘটনাটি জানাজানির পর আবু বক্কর নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, ঘটনায় ‘সাইবার এক্সপার্টদের’ নিয়ে গঠিত হয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি।
এর আগে শুক্রবার (১ মার্চ) ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টে চাপ দিতেই ৩ কোটি টাকা উধাও!’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পুলিশের হেফাজতে ফ্রিল্যান্সারের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জোরালো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় চট্টগ্রামজুড়ে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় আবু বক্কর কালবেলাকে বলেন, ‘আমি এখনো বাসায় ফিরতে পারিনি। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর আমাকে ও আমার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে তাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। টাকার কী হলো সেই খবর তো পাইনি। এখন আমি নিজের পরিবার নিয়ে চিন্তার মধ্যে আছি। টাকা ফেরত পাইনি।’
ডিবি (দক্ষিণ) উপ-পুলিশ কমিশনার নাদিরা খাতুন কালবেলাকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। যেহেতু টেকনিক্যাল বিষয় তাই যারা টেকনিক্যাল কাজে এক্সপার্ট এমন তিনজন অফিসার নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় যদি পুলিশের কেউ জড়িত থাকে তাহলে তাকে একটুও ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা চায় ভিকটিম আমাদের কাছে তার অভিযোগের বিষয়টি শেয়ার করুক।’
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল বায়েজিদ বোস্তামি থানার গুলবাগ আবাসিক এলাকার বারাকা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি কুলিং কর্নার থেকে আবু বক্কর সিদ্দিক ও ফয়জুল আমিনকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় মনসুরাবাদ ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে। সেখানে রাতভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পর দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলা দায়ের হয়।
এতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইন জুয়ায় অংশগ্রহণ করছিলেন তারা। সেই মামলায় তাদের আদালতে পাঠানো হলে সেদিনই জামিন পান ফ্রিল্যান্সার আবু বক্কর সিদ্দিক।
মন্তব্য করুন