মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪, ০১:০২ পিএম
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২৪, ০১:২৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মেয়াদ শেষ হলেও টাকা পাচ্ছেন না পপুলার ইনস্যুরেন্সের গ্রাহকরা

পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ইসলামি ডিপিএস পিরোজপুরের একটি কার্যালয়। ছবি : কালবেলা
পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ইসলামি ডিপিএস পিরোজপুরের একটি কার্যালয়। ছবি : কালবেলা

বীমা করে মেয়াদোত্তর সুবিধা পাচ্ছেন না পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের ইসলামি ডিপিএস পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার গ্রাহকরা। সংস্থাটির বিভিন্ন প্রকল্পের শতাধিক আমানতকারী ঘুরছেন চেকের আশায়। ভবিষ্যতে সঞ্চয়ের আশায় ১২ বছরমেয়াদি পপুলার লাইফে ইসলামি ডিপিএস করেন তারা।

বর্তমানে মঠবাড়িয়া পৌরসভার পাথরঘাটা বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন মরিয়ম ভিলার ৩য় তলায় সার্ভিস সেল এবং থানাপড়া রোডের বেসিক ব্যাংকের ভবনের নিচতলায় তাদের শাখার কার্যক্রম চলছে। সেখানেই প্রতিদিন গ্রাহক ও তাদের পরিবারের লোকজন ধরনা দিচ্ছেন। তবে কর্মকর্তাদের দাবি, বিধি মেনেই গ্রাহকদের মেয়াদোত্তর সুবিধার চেক প্রদানের চেষ্টা করছেন তারা।

পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের মঠবাড়িয়া উপজেলা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কয়েকজন গ্রাহক ও তাদের পরিবারের লোকজন চেকের খবর নিতে এসেছেন। এদের একজন উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালি এলাকার বাসিন্দা কবির হোসেন (৪৫)। স্ত্রী সাবিনার (৩৫) নামে ২৯ হাজার টাকার ইসলামি ডিপিএস করেছিলেন। প্রায় ২ বছর সেই বীমার মেয়াদপূর্তি হয়েছে। এরপর থেকেই চেক পেতে ধরনা দিচ্ছেন অফিসে।

সাবিনার স্বামী কবির হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী খুলনার একটি মেডিকেলে সাত মাস অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিল। তা ছাড়া আমি নিজেও অসুস্থ বক্ষব্যাধিতে অনেকদিন ভর্তি ছিলাম টাকার খুব প্রয়োজন ছিল। কর্মকর্তারা চেক দিতে পারছেন না। নানা অজুহাতে বার বার ঘুরাচ্ছেন। কর্মকর্তাদের এমন আচরণে জমানো অর্থ ফেরৎ পাওয়া নিয়েই শঙ্কিত তারা।

একই অভিযোগ মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট ছোট তালেশ্বরের গ্রামের গৃহবধূ তাসলিমা আক্তারের। ইসলামী ডিপিএস বীমার মেয়াদোত্তর সুবিধা হিসেবে মাসে ১০০ টাকা করে ১২ বছরের জমানো টাকা। প্রায় দুই বছর আগে ডিপিএসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু অফিসে এসে টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।

ইসলামি ডিপিএস বীমা গ্রাহক উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আফরোজা খানম বলেন, মাসে ৫০০ টাকা করে ১২ বছর জমিয়েছি। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারা বিভিন্ন বাহানা করে চেক দেবেন বলে ঘুরাচ্ছেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ৭ তারিখ একটি ফর্মে আমার আমার স্বাক্ষর নিয়েছেন। ছবি আইডি কার্ড ও ব্যাংক চেক দিয়েছি। সেখানে ১ লাখ ৫ হাজার টাকার হিসাব দেখেছি। এক সপ্তাহ পরে দেবেন বললেও আজও টাকা পাচ্ছি না। প্রতি মাসেই অন্তত ৫ থেকে ৭ জনের বীমার মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু বারবার ঘুরেও চেক পাচ্ছেন না। উল্টো চাপ আসছে নতুন করে বীমা করতে। শীর্ষ কর্মকর্তাদের আচরণ রহস্যজনক। আমার বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছর। আমি বারবার অফিসে যোগাযোগ ফলাফল পাইনি। অফিসের ইনচার্জকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন না।

বেচকি এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলামও (৫০) ডিপিএস করেছিলেন। অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, বছরে ১২০০ টাকা করে বাবার জমানো ১২ বছরের অর্থ ফেরত পেতে এসেছেন তার ছেলে জসিম। ২০২৩ সালে তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এক লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে এখনো ৫০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে কিন্তু তাদের দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন। অফিসের ইনচার্জকে ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেন না।

প্রবাসী জাকির হোসেন পাঁচশত কুড়ার এলাকার বাসিন্দা। ২০২১ সালে তার বীমার মেয়াদ শেষ হয়েছে। ৩০০ টাকা করে মাসে ১২ বছর জমিয়েছেন। তিন মাস দেশে থাকার পরেও তার টাকা পরিশোধ করা হয়নি। অফিসে বসে এমনটাই জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী রেকসনা বেগম (৩০)। একই অবস্থা উপজেলার আরও অনেক গ্রাহকের।

পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেডের ইসলামি ডিপিএসের মঠবাড়িয়া উপজেলা শাখার এজিএম বাবুল মিয়া বলেন, গ্রাহকের বীমার মেয়াদ বিভিন্ন সময়ে শেষ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করতেছি তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার। এখন অনলাইন সিস্টেম হয়েছে। আমরা ছবি, আইডি কার্ড ও চেকের পাতা নিয়ে ঢাকার অফিসে পাঠাচ্ছি। ১৫ দিনের ভেতরে টাকা পাওয়ার কথা রয়েছে। অনেক গ্রাহকরা পর্যায়ক্রমে টাকা তাদের টাকা পেয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির মঠবাড়িয়া উপজেলা বীমা প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাব কর্মকর্তা শফিকুল আলম জানান, তারা টাকা জমা দিয়েছেন এবং টাকা পাবেন। কাগজপত্র জমা নিয়ে পাঠাচ্ছে। এক সপ্তাহ বা পনেরো দিনের মধ্যে চলে আসেবে। কতজনের বীমা মেয়াদ পূর্তি হয়েছে এবং কতজন গ্রাহক চেক হাতে পেয়েছেন তা জানাতে পারেনি তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্বাস্থ্য পরামর্শ / রান্নায় সরিষার তেলে ঝুঁকি ও অসংক্রামক রোগ

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে আবারো দুর্ঘটনা, নিহত আরও ৩

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে ৫৮% মার্কিনি : রয়েটার্স

স্পেনের বাইরে লা লিগার ম্যাচ খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাল ফুটবলাররা

দুবাইয়ে যাওয়ার ৪ মাস পরই ৩ কোটির লটারি জিতলেন প্রবাসী

এনজো ফার্নান্দেজের মুখে রিয়াল মাদ্রিদের নাম, বাড়ছে গুঞ্জন

কেশবপুরে নারী সমাবেশ/ / ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

সাভারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দাওয়াতি মাসের শুভ উদ্বোধন

তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন, নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীও হবেন : এ্যানি

দলবদলের বাজারে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর রেকর্ড ভাঙা খরচ

১০

ধর্মগড় সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক চার বাংলাদেশি

১১

হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে মোদিকে ওয়েইসির প্রশ্ন

১২

জাকসুতে প্যানেল দ্বন্দ্ব, পদত্যাগ করে বাগছাস নেতার মিষ্টি বিতরণ

১৩

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই : বেবিচক চেয়ারম্যান

১৪

‘আ. লীগ বিদ্যুৎ খাতে চুরির লাইসেন্স দিয়েছিল’

১৫

আ.লীগ নেত্রী রুনু গ্রেপ্তার

১৬

ইসির ইউটিউব চ্যানেল চালু, মিলবে যেসব তথ্য

১৭

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তারের দাবি শিক্ষার্থী

১৮

চার বিভাগে ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি, পাহাড়ধসের আশঙ্কা

১৯

ভোলায় পাঁচ দিন ২০ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

২০
X