বছর ঘুরে শান্তি-সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে আবারও এসেছে মাহে রমজান। পবিত্র এ মাসের প্রথম দিনেই যেন বদলে গেছে ময়মনসিংহ নগরীর মানুষের নিত্যদিনের জীবনধারা। সবকিছুতেই যেন লেগেছে পবিত্রতার ছোঁয়া। প্রতি বছরের মতো এবারও পবিত্র রমজানের প্রথম দিনেই জমে উঠেছে নগরীর ইফতার বাজার।
পাড়ার দোকান থেকে শুরু করে আধুনিক রেস্টুরেন্টেও জমজমাট ইফতারের আয়োজন হয়েছে। ভিড় সামলাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরের পরপরই ময়মনসিংহ নগরীর জিলা স্কুল মোড়, নতুন বাজার, গাঙ্গিনারপাড়, সিকে ঘোষ রোড, চরপাড়া, ব্রিজ মোড়সহ প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই ইফতার বেচাকেনার তুমুল ব্যস্ততা চোখে পড়েছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রচলিত ইফতারির পাশাপাশি নানা স্বাদের বাহারি আয়োজন সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। গতবারের মতো এবারও নগরীর সারিন্দা, নবাবী, ধানসিঁড়ি, রোমথ্রিসহ নামি রেস্টুরেন্টগুলোতে শামী কাবাব, জালি কাবাব, চিকেন ছাছলিক, মাটন চাপসহ হরেক রকমের ইফতারসামগ্রী চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবুও এসব ইফতারি কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের জটলাও।
নবাবী রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যায়, বেগুনি ও পিয়াজু প্রতি পিছ ১০ টাকা, আলুর চপ ও পাকোড়া ১৫ টাকা, চিকেন সাসলিক ১২০ টাকা, টিক্কা কাবাব, ৬০, নারগিস কাবাব ৭০, রাশিয়ান ফ্রাই ১৭০, চিকেন চাপ ১৭০, আস্তো মুরগির রোস্ট ৫২০, পাতিল ভেদে হালিম ১৫০ থেকে ১০০০ টাকা, বোরহানি প্রতি লিটার ২৪০ টাকাসহ বিভিন্নসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে।
নবাবী রেস্টুরেন্টের কর্মী মোর্শেদ কামাল জানান, গতবারের চেয়ে বেশি ইফতারসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে এখানে। এবার আমরা ৪৫টি আইটেম রেখেছি। দাম আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। প্রথম দিনে ক্রেতার বেশ ভালো।
এ ছাড়া প্রায় ১০০ ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছে সারন্দা রেস্টুরেন্ট। ইফতারে মুখে স্বাদ আনতে অতুলনীয় সারিন্দার স্পেশাল হালিম। ১৬০ থেকে ৩৬০ টাকা পাতিলে বিক্রি হচ্ছে খাবারের এ পদটি। নগরীর নানা প্রান্ত থেকেই লোকজন ভিড় জমান এ হালিমের স্বাদ নিতে।
রেস্টুরেন্টের সহকারী পরিচালক ওলিনুর আলম কুন্তন বলেন, আমরা যেসব ইফতারসামগ্রী তৈরি করেছিলাম তা ৪টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। এরপর আবারও আয়োজন করা হচ্ছে। এবার প্রথম দিনে ক্রেতার চাহিদা অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।
নগরীর অন্যান দোকানিরা জানিয়েছেন, সকাল ১১টা থেকেই প্রতিটি দোকানে দোকানে শুরু হয়ে যায় ইফতার তৈরি। তখন ভাজা শুরু হয় পেয়াজু, আলুর চপ ও বেগুনির মতো আইটেমগুলো। আর সর্বত্রই মিলছে সাধারণ ছোলা-মুড়ি, পেয়াজু, খেজুর, জিলাপি, বেগুনি এবং আলুর চপ।
ইফতারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে জিলাপি। বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের স্পেশাল জিলাপির পাশাপাশি বরাবরই চাহিদার শীর্ষে থাকে জিলা স্কুল মোড়ের জাকির মিয়ার ডাল-চালের টক জিলাপি। নগরবাসীর কাছে এ জিলাপির কদর আলাদা, বলছিলেন সানকিপাড়া থেকে ক্রেতা সাঈদ আরমান।
তিনি বলেন, ইফতারে পূর্ণতা পেতেই এ জিলাপির দোকানে আসা। আলাদা স্বাদ রয়েছে জাকিরের জিলাপির মধ্যে। পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে ইফতার করব।
মন্তব্য করুন