রংপুরের পীরগাছা রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবিতে উদ্বোধনের দিন থেকে প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনকে আটকে রাখছেন স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় ও রাত ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে ৩-৪ মিনিট আটকে রাখা হয়।
এ সময় ট্রেন থামাতে পীরগাছা স্টেশন এলাকায় শত শত মানুষ অবস্থান নেয়। এর আগে উদ্বোধনের দিন মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই স্টেশনে ট্রেনটিকে ৩৫ মিনিট আটকে রাখা হয়। পরে রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আশ্বাসে ছেড়ে দেওয়া হলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন আসা-যাওয়ার পথে ন্যূনতম ৩ মিনিট ট্রেনটিকে ওই স্টেশনে থামিয়ে রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা মোতাবেক প্রতিদিন নিয়মিতভাবে ট্রেনটিকে আটকে রাখছেন তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন বলেন, আমাদের এমপি সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সাথে এ বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি আমাদের ঢাকায় ডেকেছেন। আমরা আগামী শনিবার ঢাকায় যাব। আশা করছি, শিগগিরই পীরগাছায় স্টপেজের বিষয়ে পরিপত্র জারি হবে। তবে পরিপত্র না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে।
এর আগে শনিবার (৯ মার্চ) বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রাবিরতি পীরগাছায় না থাকার বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র বিষয়টি নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন স্থানীয়রা। এর প্রেক্ষিতে রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে পীরগাছা সরকারি কলেজে ট্রেনটির যাত্রাবিরতির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণের জন্য সভা করেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সুশীল সমাজের নেতারা।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে উপজেলা নাগরিক কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে যাত্রাবিরতির দাবি জানিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মাহুতির ঘোষণা দেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী সরকারসহ বেশ কয়েক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সন্ধ্যা থেকে পীরগাছা রেলস্টেশন চত্বরে দলে দলে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ জমায়েত হতে থাকেন। পরে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ট্রেনটি পীরগাছা স্টেশন অতিক্রম করতে থাকলে বিক্ষুব্ধ জনতা রেলপথ অবরোধ করে ট্রেনটিকে ৩৫ মিনিট আটকে রাখার পর ছেড়ে দেন।
মন্তব্য করুন