জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘দালালরা প্রতিদিন সকাল-বিকাল নির্যাতন করত’

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাসিন্দা আতাউর রহমান। ছবি : কালবেলা
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাসিন্দা আতাউর রহমান। ছবি : কালবেলা

ভাগ্য বদলের আশায় সংসারে সচ্ছলতা আনতে দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের বাসিন্দা আতাউর রহমান। প্রতারণার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন দালালদের অমানুষিক নির্যাতন ভোগ ও জেল খেটে অবশেষে সোমবার (১১ মার্চ) দেশে ফিরেছেন তিনি।

জানা গেছে, স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী আতাউর। প্রবাসে একটু বেশি আয় করে সংসারে সচ্ছলতা আনতে পাড়ি জমান লিবিয়ায়। বাংলাদেশি দালালের প্রতারণার শিকার হয়ে মেলেনি কোনো কাজ।

উল্টো বাংলাদেশি ও লিবিয়ার দালালরা মিলে আটকে রেখে চালিয়েছেন লোমহর্ষক নির্যাতন। পরিবারের কাছ থেকে নিয়েছেন মোটা অংকের মুক্তিপণ। তাদের প্রতারণায় পড়ে ২৮ দিন লিবিয়ার কারাগারেও জেল খাটতে হয়েছে তাকে।

সেই দুঃস্বপ্নের লোমহর্ষক নির্যাতনের কথা শুনিয়ে আতাউর বলেন, লিবিয়া ও বাংলাদেশের দালালদের জিম্মিদশায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল নিয়ম করে নির্যাতন করত। টাকা পরিশোধ করা না হলে নির্যাতন চলত। ঠিকমতো খাবার ও পানি দেওয়া হতো না। এক পাশেই শুয়ে থাকতে হতো। অন্যদিকে তাকালেই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যেত।

তিনি বলেন, কেউ যেন যাচাই না করে ভুয়া এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ না যায়। দালালের প্রতারণার স্বীকার থেকে রক্ষা পেতে যাচাই-বাছাই করে সঠিক নিয়মে সবাই বিদেশ যাবেন।

আতাউরের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী ফিরে আসাতে আমরা অনেক খুশি হয়েছি। ওখানে জিম্মি থাকা অবস্থায় অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। ওনাকে নির্যাতন করত আর আমাদের সেই নির্যাতন শোনানো হতো। মুক্তিপণের জন্য সকাল বিকাল নির্যাতন করেছে। তাকে ফিরে পাব কখনো ভাবিনি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সহায় সম্বল বিক্রি করে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম, দালালদের খপ্পরে পড়ে এখন আমরা নিঃস্ব। আমরা এখন পথে পথে ঘুরে বেড়াই।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, আতাউর রহমান নামে একজনকে লিবিয়ায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করছে এবং পরিবারের কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। গত বছর আমাদের কাছে এমন অভিযোগ আসে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমরা জীবননগর থেকে শাহিন শেখ ও নবাব আলী নামে দুজনকে আটক করি। তাদের আটকের পর মূল ঘটনাটা জানতে পারি। মুক্তিপণের সাড়ে চার লাখ টাকাও একটি অ্যাকাউন্টে দিয়েছিল আতাউরের পরিবার। তদন্ত করে আমরা সেই অ্যাকাউন্টটি আদালতের নির্দেশে বন্ধ করি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আটক দালালদের মাধ্যমে সেখানকার দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আতাউরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। গত ১১ মার্চ তাকে দেশে নিয়ে আসি।

নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, দালালের প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে যাচাই-বাছাই করে সরকারের অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে সঠিক নিয়মে বিদেশ যাওয়া উচিত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রেন উদ্ধার শেষে ফেরার পথে প্রাণ হারালেন রেল প্রকৌশলী

সীমান্ত থেকে ২৭৯ ভারতীয় গরু ও মহিষ আটক 

৮০ পয়সার টিকা পেতে গুনতে হচ্ছে ৬০ টাকা!

জুলাই সনদ ঘোষণার আগে ‘নির্বাচন’ প্রশ্নবিদ্ধ হবে : জাগপা

আইইসিসি বাংলাদেশ আয়োজন করছে ‘মাল্টি-ডেস্টিনেশন এডুকেশন এক্সপো ২০২৫’ 

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পাঞ্জাবি গায়ক

পাবনায় ছাত্র হত্যা মামলায় ১৩৬ জনের নামে চার্জশিট 

এখন মন খারাপ হয় না পলকের, লড়তে চান ভোটে

আবর্জনা আপলোড করা কারও কাজ হতে পারে না : পিয়া জান্নাতুল

‘আমি মনে করি না এটা কোনো নির্বাচন ছিল’

১০

পদ্মার ভাঙনে বিলীন স্কুল ভবন, বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম

১১

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় : আমীর খসরু

১২

আমার কষ্টের কথা মা-বাবাকেও বলতে পারি না: দেব

১৩

তেলাপিয়া মাছ খেলে কি সত্যিই বিপদ

১৪

কলকাতার সিনেমা থেকে বাদ তানজিন তিশা

১৫

বুলবুলকে অবৈধ সভাপতি দাবি, ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা ৪৮ ক্লাবের

১৬

ছবি শেয়ার করে কটাক্ষের মুখে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া

১৭

গাইবান্ধায় নতুন করে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ৬ জন

১৮

মোবাইলে আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচ দেখবেন যেভাবে

১৯

টানা ৫ দিন বজ্রবৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা

২০
X