চাঁদপুর শহরের আল-মানার হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক ডা. তাবেন্দা আক্তারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সিজারে জন্ম নেওয়া দুদিন বয়সী নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে চিকিৎসক তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে এজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে শহরের মিশন রোডস্থ হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলায় ২০৫ নম্বর কক্ষে ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়।
তবে ওই নবজাতকের মা সুমি আক্তার (২৭) এখনো সুস্থ আছেন। তিনি জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিশকাটালি গ্রামের কাজী বাড়ীর মিজানুর রহমানের স্ত্রী। মিজান ময়মনসিংহে দিনমজুরের কাজ করেন। সুমি আক্তারের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
মৃত নবজাতকের ফুফু লুৎফুর নাহার বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত নেওয়ার জন্য ২১ মার্চ এই হাসপাতালে সুমি আক্তার ভর্তি হয়। আল্ট্রাসনোগ্রাম অনুযায়ী তার সন্তান জন্মের তারিখ ছিল আগামী ২৬ এপ্রিল। কিন্তু আল্ট্রাসনোগ্রাফি চিকিৎসক সাহিদা সুলতানা দ্বিতীয় সিজার হিসেবে ১০ এপ্রিল তারিখ দেন। ওই তারিখ আসার পূর্বেই প্রয়োজনীয় সব ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই গাইনি চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার সিজার করেন।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ করেননি। আমাদের আত্মীয়ের মধ্যেও চিকিৎসক আছেন। তিনি কেন অতি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া রোগীর সিজার করলেন। আমি নিজে আসার পূর্বেই সিজার সম্পন্ন হয়। তারা তাড়াহুড়া করে কেন ১ মাস পূর্বে অপরিপক্ব নজাতকের সিজার করলেন। তখনই আমি বলেছি অপরিপক্ব বাচ্চা বাঁচানো যায় না। এ ধরনের চিকিৎসকের বিচার হওয়া উচিত।
অভিযুক্ত চিকিৎসক তাবেন্দা আক্তার বলেন, সিজারের পর কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। অপারেশন থিয়েটারে নবজাতকের মৃত্যু হয়নি। দুই দিন পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলে এখানে চিকিৎসকের কিছু করার নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জবাব দিবে।
আল-মানার হাসপাতালের পরিচালক অহিদুর রহমান বলেন, রোগীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আমাদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তার কাছে তারা যেতে পারেন। শিশুর অবস্থার অবনতি হলে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেই। কিন্তু তারা না নিয়ে হাসপাতালে থেকে যায়। আমাদের সঙ্গে রোগীর আত্মীয় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, হাসপাতালের পাওনা পরিশোধ করে রোববার রোগীকে নিয়ে যাবেন।
এই ঘটনা জেনে চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল হোসেন ও ফেরদৌস নুর হাসপাতালে আসেন। উভয় পুলিশ কর্মকর্তা রোগী ও হাসপাতাল পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
মন্তব্য করুন