তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ঈদের কেনাকাটায় স্থানীয় হাটবাজারের দোকানগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিশু, কিশোরসহ বাড়ির সব বয়সী সদস্যদের জন্য জামা-জুতা, কসমেটিক বা প্রসাধনীসামগ্রীর কম দামের ছোটখাটো দোকানে নারী-পুরুষ ক্রেতাদের পদচারণায় এরইমধ্যে জমে উঠেছে ঈদ বাজার।
তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকার সাপ্তাহিক হাট, বাজারেই ঈদ বা পহেলা বৈশাখের মতো উৎসবে কেনকাটা বেশি হয়। আর জন্য এ অঞ্চলেও নিম্নআয়, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাদের সাধ্যের বা আর্থিক সংগতির ওপর নির্ভর করে বাজারের কম বা বেশি দামি জিনিসের দোকানে গিয়ে থাকেন কেনাকাটা করেন।
কৃষি প্রধান এলাকা হিসেবে তাড়াশের বিভিন্ন এলাকার গরিব লোকজন, শ্রমিক, নিম্নআয়, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ কম বা সাশ্রয়ী দামে জিনিসপত্র পাওয়া যায় এমন হাট ও বাজার রয়েছে বলে জানান মাছদক্ষিণা গ্রামের নাসির উদ্দিন।
তিনি আরও জানান, উপজেলার নওগাঁ হাট, গুল্ট হাটা, বিনসাড়া হাট, বারুহাস হাট, ধামাইচ হাট, কাটাগাড়ি হাট বা উপজেলার সিমান্ত এলাকার নিমগাছি, সলঙ্গা, রানির হাট, চাচকৈড় হাট বাজারসহ তাড়াশ উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় বাজারে তারা ঈদ বা পহেলা বৈশাখ এ কেনা কাটা করতে পারেন। যার মধ্যে কয়েকটি হাট বা বাজারের এ কম দামের দোকানও থাকে যা এলাকায় গরিবের দোকানও বলা হয়।
আর এ সকল দোকানে কম দামের পাঞ্জাবি, প্যান্ট, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ওরনা, ফতুয়া, টি-শার্ট, আবার শূন্য থেকে ৮ বছরের শিশুদের হরেক রকম শিশু পোশাক ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী কিশোরদের স্বল্প মূল্যের চটি, সান্ডেল, জুতা, মেয়েদের কসমেটিক বা প্রসাধনীসামগ্রীর পাওয়া যায় এমনটিই বলেন, তাড়াশ আটচালা মার্কেটের ক্ষুদ্র পোশাক ব্যবসায়ী আমির হোসেন।
সোহাগ হোসেন, আবু তাহের, সাহেব আলীসহ বেশ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, শুধু তাড়াশ আটচালা মার্কেট নয় উপজেলার অনন্ত ১৫ থেকে ২০টি হাট বা বাজারে ৮০ টাকা মূল্যের শিশু পোশাক থেকে ৪০০ বা ৫৫০ টাকায় ঈদের জন্য সব বয়সী কিশোর, কিশোরী বা বড় মানুষের পোশাক কেনা সম্ভব। তাই এ সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভিড়ও একটু বেশি।
তবে আটচালা মার্কেট কেনাকাটায় আসা তালম গ্রামের আব্দুল মান্নান সরকার জানান, তার পরিবারটি মধ্যবিত্ত। জমিজমাও রয়েছে প্রায় ১২ থেকে ১৫ বিঘার মত। তবে কম দামে কেনা যায় এ কথা জেনে এবার ঈদের কেনা কাটায় তাড়াশ আটচালা মার্কেটে এসেছি। কারণ বর্তমান বাজারে সকল নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক দামের কারণে সংসার চালানোই কঠিন তাই বেশি টাকায় ছেলেমেয়েদের পোশাক কিনে দিতে পারব না বলেই এখানে এসেছি।
এমনি এখানে আরও এসেছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধূ শানিনুর খাতুন, স্বরর্তী, মিতু, মিমি খাতুন। তাদের মধ্যে দেশিগ্রামের মনোয়ারা খাতুন বলেন, এবার বড় বড় দোকানে গিয়ে বেশি দামে জামা জুতা কিনতে পারার মতো আর্থিক টানাপোড়েন থাকায় গরিবের মার্কেট নামের এসব দোকানেই কেনাকাটা করছি।
উপজেলার রানীরহাট বাজারে কাপড়ের দোকানদার আব্দুল হালিম জানান, এ সকল কম দামি পণ্যের দোকানে শ্রমিক, নিম্নআয়, নিম্নমধ্যবিত্তদের পাশাপাশি কেনাকাটায় প্রচুরসংখ্যক মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন আসছেন।
আর এখানে পণ্য কিনতে আসা চুমকি, কামরুল, জাকির হোসেনসহ অনেকেই বলছেন, এ বছর ঈদের বাজেট কম। সংসারে আর্থিক টানাটানি তো আছেই। তাই সাধ ও সাধ্যের কাছাকাছি কেনাকাটা করছেন তারা।
মন্তব্য করুন