এনামুল হক মিলাদ, আজমিরীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৩, ১১:৫১ পিএম
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৯:০৩ এএম
অনলাইন সংস্করণ

দেড় যুগ ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা গোলাপজান

দেড় যুগ ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া গোলাপজান। ছবি : কালবেলা
দেড় যুগ ধরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া গোলাপজান। ছবি : কালবেলা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামের মৃত মারাজ উল্যার স্ত্রী গোলাপজান বিবি (৬০)। প্রায় বিশ বছর আগে অভাবের তাড়নায় নিজের বসত ভিটা বিক্রি করে চার ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নেন একই গ্রামের সাবেক জমিদার মৃত রমজান আলী চৌধুরীর পুত্র মৃত দুলাল মিয়া চৌধুরীর বাড়িতে। দুলাল মিয়ার বাড়ির পুর্ব পাশে ছোট একটি টিনের ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করেন মারাজ উল্যা ও তার স্ত্রী গোলাপজান বিবি। কিছুদিন পর তাদের কোলজুড়ে আসে আরেকটি পুত্র সন্তান। গোলাপজান আর স্বামী মারাজ উল্যার অক্লান্ত পরিশ্রমে কোনো রকমে চলছিল আট সদস্যের সংসার।

প্রায় আট বছর আগে হঠাৎ মৃত্যু হয় মারাজ উল্যার। বাবার মৃত্যুর পর একে একে পাঁচ পুত্র সন্তান বিয়ে করে মাকে রেখেই চলে যায় অন্যত্র। অনেক কষ্টে নিজের গ্রামেই মেয়ের বিয়ে দেন গোলাপজান বিবি। এরপর থেকে তিনি একা। বয়স হয়ে যাওয়ায় এখন আর অন্যের বাড়িতে কাজও তেমন করতে পারেন না তিনি। যতটুকু পারেন কাজ করেন আর বাকি সময় মানুষের দেয়া সাহায্যই এখন গোলাপজান বিবির বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা।

সরজমিনে গোলাপজান বিবির বসত ঘরে গিয়ে দেখাযায়, জরাজীর্ণ ও ভাঙ্গা একটি ঘরে বসবাস করছেন তিনি। ঝড় বৃষ্টিতে ঘরের বিভিন্ন অংশে পানি পড়ে।

এ সময় কথা হয় গোলাপজান বিবির সঙ্গে। কথা বলার সময় কান্না ভেঙ্গে পড়েন তিনি। গোলাপজান বিবি জানান, প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী অভাবের তাড়নায় নিজের বসত ভিটা বিক্রি করে দেন। তখন থেকেই মৃত দুলাল মিয়া চৌধুরীর বাড়ির পূর্ব পাশে একটি খালি জায়গায় ছোট একটি টিনের ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন। এখানে আসার পর আরেক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। আট বছর আগে স্বামী মারা যাবার পর পাঁচ পুত্র সন্তান একে একে বিয়ে করে আমাকে ফেলে চলে যায়। কেউই আর আমার খোঁজ নেয় না। অনেক কষ্টে একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এখন বয়স হয়েছে আগের মত মানুষের বাড়িতে কাজ করতে পারি না। যতটুকু কাজ করি তাতে সব বেলা খাবার জুটে না। পাড়া-পড়শীরা সহযোগিতা করে। এভাবেই কোনরকমে বেঁচে আছি। কয়েক বছর আগে বিধবা ভাতায় নাম উটছে, বিধবা ভাতাটা পাই।

ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিত বলেন, উনি প্রকৃতই অসহায়। যখনই সরকারি কোনো অনুদান আসে উনাকে দেয়ার চেষ্টা করি।

জলসুখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ খেলু বলেন, এমনিতে সরকারি বরাদ্দ আসলে পরিষদ থেকে সকল দুস্থদেরই আমরা দেই। গোলাপজান বিবির বসতভিটা নেই কিনা সেটা জানি না। সম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্পে উনার নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে কিনা বলতে পারবো না। অনেকেই সই নিয়েছেন। তবে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি আমি দেখবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবো। এছাড়াও সরকারিভাবে উনাকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায় উপজেলা প্রশাসন থেকে তা করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ক্যারিবিয়ান সাগরে নিহত ৪

দোনবাস না ছাড়লে রাশিয়া শক্তি দিয়ে দখল করবে : পুতিন

দক্ষিণ সিরিয়ায় ইসরায়েলের আবারও হামলা

সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কমাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র   

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ৪২ জনকে স্ট্যান্ড রিলিজ

 ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘তুই’ বলায় তুমুল সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জন

আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই : গণতন্ত্র মঞ্চ 

চার দেশে বন্যায় ১৫০০ মৃত্যুর পর নতুন আতঙ্ক

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত

শাহজালালে ‘এয়ারপোর্ট মিনি ফায়ার এক্সারসাইজ-২০২৫’ সম্পন্ন

১০

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম

১১

ইউএনও হলেন লাক্স সুন্দরী সোহানিয়া

১২

তারেক রহমানের ৩১ দফায় বদলে যাবে শরীয়তপুর : নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু

১৩

এরশাদ-হাসিনা কারও সঙ্গেই আপস করেননি খালেদা জিয়া : মিল্লাত

১৪

মান্নাকে ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত নোটিশ, আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

১৫

সব দল ইসলামের পতাকাতলে সমবেত হবে ইনশাআল্লাহ : অধ্যাপক মুজিবুর

১৬

মনোনয়নের খবর শুনে উচ্ছ্বাস, কিছুক্ষণ পর বিএনপি নেতার মৃত্যু

১৭

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা / সাবেক বিচারপতি-হুইপসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট

১৮

ইসলামের বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা

১৯

ববি উপাচার্য দপ্তরে ‘মুলা’ ঝুলিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ

২০
X