সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই শাখার জনতা ব্যাংক পিএলসির ৫ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে ওই শাখার ম্যানেজারসহ ৫ কর্মকর্তা ও অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে জনতা ব্যাংক পিএলসি তামাই শাখার ব্যবস্থাপক মো. আল আমিন শেখ (৪২), সহকারী ব্যবস্থাপক মো. রেজাউল করিম (৩৪), সাবেক ক্যাশ অফিসার মো. খালেদ ইউনুছ (৩১), অফিসার মো. রাশেদুল হাসান (৩৪), ক্যাশ অফিসার শাহ মখদুম উদ্দৌলা (২৯) ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, জনতা ব্যাংক পিএলসি তামাই শাখার ভল্ট থেকে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ব্যাংকটির সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম গত ২৫ মার্চ বেলকুচি থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি দুদকের তপশিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় সেটি দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পাবনার উপপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। অভিযোগটি যাচাই বাছাই করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। পরে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমোদন দিলে ১ এপ্রিল মামলাটি দায়ের হয়।
মামলার বিবরণে বাদী উল্লেখ করেন, জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম, এরিয়া অফিসের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. আসাদুজ্জামান ও প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মনিরুজ্জামান গত ২০ মার্চ তামাই শাখা পরিদর্শনে যান। এ সময় শাখার ম্যানেজার আল আমিন শেখকে অনুপস্থিত দেখা যায়।
ক্যাশ যাচাই করে দেখা যায়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় ব্যাংকের নগদ ক্যাশ, চেক বা ট্রান্সফারের মাধ্যমে ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক রাজশাহী বিভাগীয় মহাব্যবস্থাপক অরুন প্রকাশ বিশ্বাসসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
পরে ২৪ মার্চ তামাই শাখার ম্যানেজার আল আমিন শেখ ব্যাংকে যোগদান করলে হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়ে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করেন। দায় স্বীকার করে তিনি পরিশোধের নিমিত্তে সানড্রি ডিপোজিট হিসাবে ২০ লাখ টাকা জমা দিলেও বাকি টাকা দিতে ব্যর্থ হন।
দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. খায়রুল হক বলেন, জনতা ব্যাংকের ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি থানা থেকে আমাদের কাছে আসে। সেটি দুদকের যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান কার্যালয়ে পাঠান। সেখান থেকে অনুমতি আসার পর মামলা রজু হয়েছে। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুদক পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধরকে।
মন্তব্য করুন