নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ, ফ্যাসিস্ট শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচার নিশ্চিতের পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন চায় বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তির দাবির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমরা জকসু চাই। কিন্তু এই ক্যাম্পাসে কোনো গণহত্যাকারী থাকতে পারবে না, কোনো ফ্যাসিস্টের বিচরণ থাকতে পারবে না। একইসঙ্গে ছাত্রদলের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সম্পূরক বৃত্তির সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে।’
উপাচার্যকে হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘কুসুম কুসুম আন্দোলন দিয়ে গদি রক্ষার চেষ্টা করবেন না। আমরাও অবরুদ্ধ করতে পারি। আমরা ভেতর রেখে নয়, বাইরে রেখে তালা দেব। সচিবালয়, ইউজিসিতে যদি কোনো ফাইল লাগে, তবেই তালা খোলা হবে। তার আগে নয়।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘অন্যান্য ক্যাম্পাসে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের বিচার করা হয়েছে। কিন্তু এ কাজে জগন্নাথ পিছিয়ে। তাদের বিচার না করে জকসু নির্বাচন দিলে ভোট দেবে ছাত্রলীগ, ভিপি হবে ছাত্রলীগ। আমরা অবশ্যই জকসু নির্বাচন চাই। কিন্তু এই সন্ত্রাসী লীগের বিচারের পর। কাল তাদের বিচার করে, পরশুই জকসু নির্বাচন হোক, আমাদের আপত্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী জকসু নির্বাচনের নামে শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি সম্পূরক বৃত্তিকে আড়াল করে ফেলেছে। তাদের এই উদ্দেশ্য সফল হবে না।’
যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদার বলেন, ‘জবি শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে ছাত্রদল কাজ করছে। জবি শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমরা আছি। আমরা মে মাসে আবাসন ভাতার জন্য শিক্ষার্থীদের হয়ে আন্দোলন করেছি। দ্রুত সম্পূরক বৃত্তির ব্যবস্থা করতে হবে ও সেকেন্ড ক্যাম্পাসের কার্যক্রমের মূল্যায়ন করতে হবে। ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিস্টের দোসর শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিচার করে জকসু নির্বাচন করতে হবে।’
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আলী বলেন, ‘আমরা যে দাবি নিয়ে এসেছি তা শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। স্টুডেন্টদের দুঃখের সীমা নেই। পুরান ঢাকায় থাকতে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রশাসনের দুর্বলতায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। হল আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জবি ছাত্রদলের ভূমিকা ছিল। অতিদ্রুত সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর করার দাবি জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ, ফ্যাসিস্টদের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে। আমরা জকসু নির্বাচন তখনই চাই, যখন ছাত্রলীগ ও ফ্যাসিস্টের দোসর শিক্ষকদের বিচার হবে।’
এসময় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জাফর আহম্মদ, সুমন সরদার, মোস্তাফিজুর রহমান রুমি, শাহরিয়ার হোসেন, রুপোন্তি রত্না, রাসেল হোসেন, সাখাওয়াতুল ইসলাম পরাগ, নাহিয়ান অনিক, রাশেদ আমিন, রবিউল ইসলাম বক্তব্য দেন। এ ছাড়া সংগঠনটির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন