টেনেটুনে সংসার চলতো শরিফ সর্দারের। টেনেটুনে চলা সংসারে রসগোল্লা তৈরি করে ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে খুলেছে তার। চাঁদপুরে হাইমচরের চরভৈরবীতে দুর্গম গ্রাম এলাকায় রসগোল্লা বিক্রি করে এখন সাবলম্বী তিনি। শরিফ সর্দার নিজেই রসগোল্লা তৈরি করে ছোট দোকানে বিক্রি করেন। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে প্রতিনিয়ত হোটেলে লোকজন ভিড় করেন লোকজন।
শনিবার (৪ মে) ২ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী বাজারের ইসলামিয়া হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, কড়াইয়ে রসগোল্লা ভিজিয়ে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে গরম গরম রসগোল্লা বিক্রি করছেন দোকানি শরিফ সর্দার। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে আত্মীয়দের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন রসগোল্লা।
জানা গেছে, শরিফ সর্দার হচ্ছেন আবুল হাসেম ও মো. নুরজাহান বেগম দম্পতির ছেলে। বর্তমানে তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারসহ ৩ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। সংসারের পুরো খরচটাই এই রসগোল্লা বিক্রি আর হোটেল ব্যবসাকে ঘিরে তিনি সংগ্রহ করেন। তার ব্যবসায়িক এ কাজে আরও ৫ জনের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
মো. মিন্টু নামে এক যুবক বলেন, আমি শুধু এখানে গরম গরম রসগোল্লা খেতেই আসি। এ গ্রামে এত সুস্বাদু মিষ্টি পাওয়া যায় তা ভাবতেই অবাক লাগে। আমি প্রায়ই রুটির সঙ্গে রসগোল্লা খেতে এখান থেকে কিনে নিয়ে যাই।
মিঠুন নামের আরেকজন বলেন, মূল শহরের দোকানপাট অনেকটা দূরে হওয়ায় নদী পাড়ের খেটে খাওয়া মানুষ এ বাজার থেকেই ভালোমন্দ কিনে খায়। তবে বাজারটি পূর্ণতা পেয়েছে শরিফের রসগোল্লাকে ঘিরে। বিয়ে কিংবা উৎসবে আতিথেয়তার জন্য এখান থেকে সবাই রসগোল্লা কিনতে পারে।
শরিফ সর্দার কালবেলাকে বলেন, আমার হোটেল ব্যবসা প্রায় ৩০ বছর। রসগোল্লা বানাচ্ছি ১২ বছর ধরে। দিনে ২৭০ টাকা কেজি দরে কমপক্ষে ২৫ কেজি রসগোল্লা বিক্রি করতে পারি। নিজের গোয়ালের গাভীর দুধ দিয়েই রসগোল্লা তৈরি করি। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার রসগোল্লার চাহিদা বেশি থাকে।
তিনি বলেন, শুরুর দিকে কারিগররা রসগোল্লা বানাত। পরে আমি দেখতে দেখতে শিখে গেছি। এখন আমি নিজেই বানাচ্ছি। কখনো দিনে ৩০/৪০ কেজি রসগোল্লাও বিক্রি করছি। চাহিদা থাকলে দুবেলা এবং স্বাভাবিকভাবে এক বেলাই রসগোল্লা তৈরি করি। সবাই যখন রসগোল্লা খেয়ে ভালো বলে তখন মনে শান্তি পাই। আমি রসগোল্লা তুলনামূলক সীমিত লাভে বিক্রি করি। কেউ যদি আমার কাজে উৎসাহ দেয় আমার কাছে বিষয়টা ভালো লাগে।
মন্তব্য করুন