মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ধান, পাট, তিল ও বাঙ্গি চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে রোববার (৫ মে) রাতের এ তাণ্ডবে দুটি উপজেলার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ সদরের রমজানবেগ এলাকার শতাধিক কৃষক বাঙ্গি চাষ করে এখন দিশাহারা। এ ফসলের আয় দিয়েই অধিকাংশ কৃষকের সারা বছর চলে। সবে মাত্র ক্ষেত থেকে কৃষক বাঙ্গি বিক্রি শুরু করেছেন। কিন্তু হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে এ ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন।
স্থানীয় কৃষক মো. রফিক সবুজ বলেন, কিস্তি-লোন নিয়া চাষাবাদ করছি। বাঙ্গি, কুমড়া, ধুন্দুল, ভেন্ডি গত রাতের শিলাবৃষ্টিতে আমাগো স্বপ্ন শেষ হইয়া গেছে। গত তিন মাস ধরে যত্ন নিয়া চাষাবাদ করতাছি। সামনে কীভাবে চাষাবাদ করুম চিন্তা কইরা কূল পাইতাছি না। আর একটা সপ্তাহ যদি সময় পাইতাম তাইলে বাঙ্গিগুলো বিক্রি কইরা কিছু টাকা লাভ পাইতাম।
ক্ষতিগ্রস্ত অপর কৃষক মো. নূর হোসেন বলেন, আমি ৪৮০ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি আবাদ করছি। পাশাপাশি কুমড়া ও পাট চাষ করছি। আমার দুই থেইকা আড়াই লাখ টাকা খরচ হইছে। লাভ হইতো লাখ তিনেক টাকা। গত রাতের বৃষ্টিতে সব শেষ হইয়া গেছে। কোনো ফসল আর বিক্রি করার উপযোগী নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. ইকরাম হায়দার বলেন, মিষ্টি কুমড়া, বাঙ্গি, ভুট্টো ও বটবটিসহ চার কানি জমিতে সবজি আবাদ করছি। গতকালকের শিলাবৃষ্টিতে গাছের পাতাসহ সব নষ্ট হইয়া গেছে। ফাল্গুন মাসে বাঙ্গি কুমড়া রোপণ করছি। তিন মাস হইয়া গেছে আর কয়েক দিন হইলেই এগুলো বিক্রি কইরা দুই আড়াই লাখ টাকা লাভ করতে পারতাম। এখন সব শেষ হইয়া গেছে। দুদিন পর এইগুলো পইচ্চা যাইবো, গরুরেও খাওয়ানো যাইব না। এখন সরকার থেইকা যদি কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় তবে ক্ষতি কিছুটা শামাল দেওয়া যাবে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক শান্তনা রাণী বলেন, প্রাথমিকভাবে জেলার দুটি উপজেলার ফসলি জমি ক্ষতির যে তথ্য পেয়েছি তার মধ্যে বোরো ধানের জমি রয়েছে ৩০০ হেক্টর, ভুট্টা আবাদকৃত জমি রয়েছে ১৫০ হেক্টর। তাছাড়া পাট, তিন, সবজি ও বাঙ্গি আবাদকৃত জমি রয়েছে আরও এক থেকে দেড়শ হেক্টর।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলেনি। এ বিষয়ে কোনো প্রণোদোনা এলে তা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
মন্তব্য করুন