সাতক্ষীরায় হত্যা ও তরুণীকে ধর্ষণের পৃথক দুটি মামলায় দুই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত।
বুধবার (১৯ জুলাই) সাতক্ষীরা দায়রা জজ চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক এম জি আযম এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে আব্দুর রহমান ও আশাশুনির মনিপুর গ্রামের মোকছেদ আলী ঢালীর ছেলে রবিউল ইসলাম ঢালী।
সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. আব্দুল লতিফ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাতক্ষীরার কলারোয়ায় মোছা. সানজিদা হোসেন সুজ্যোতি (১৩) নামে এক কিশোরীকে হত্যার দায়ে তার প্রেমিক আব্দুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সুজ্যোতি হত্যা মামলার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের সোহরাব হোসেনের স্ত্রী লাইলী পারভীন ঢাকায় একটি গার্মেন্টেসে কাজ করত। তার মেয়ে সানজিদা হোসেন সুজ্যোতি গ্রামে দাদা-দাদির কাছে থেকে লেখাপড়া করত। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় সুজ্যোতি। একপর্যায়ে ২৮ মার্চ ভোরে একই গ্রামের বিলের মধ্যে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনার এক বছর আগে সানজিদা হোসেন সুজ্যোতির সাথে তার প্রতিবেশী আব্দুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
এ ঘটনায় সানজিদা হোসেন সুজ্যোতির মা লাইলী পারভীন হত্যার অভিযোগে কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে এ মামলায় সানজিদা হোসেন সুজ্যোতির প্রেমিক আব্দুর রহমানকে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সাথে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দখল করেন।
এ মামলায় ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামি আব্দুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত আশাশুনির মনিপুর গ্রামের মোকছেদ আলী ঢালীর ছেলে রবিউল ইসলাম ঢালীকে (৪৫) ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৯ জুন কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে তরুণীর বাবা মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ ৫ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। আদালতে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। আসামি পালাতক রয়েছে।
মন্তব্য করুন