দীর্ঘ সময় বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে গেছিলেন পাত্রী দেখতে। পাত্রী দেখে পছন্দও হয়েছিল। এমনকি বিয়ের দিন তারিখও ঠিক করেছিলেন দুই ভাই মিলে। কিন্তু বিয়ের তারিখ পাকা করেও বিয়ের পিড়িতে বসা হলো না প্রবাসী মিথোন মাতুব্বরের। পাত্রী দেখে বাড়ি ফেরার পথে ছোটভাইয়ের সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তিনি।
সোমবার (০৩ জুন) ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির মাজরা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মিথোন ও তার ছোটভাই অন্তর মাতুব্বর নিহত হন। তারা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলগি ইউনিয়নের নিজাম উদ্দিনের ছেলে। বিষয়টি আলগি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নেজাম উদ্দিন মাতুব্বরের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। ১০ বছরের বেশি সময় প্রবাসে কাটিয়ে দেড় মাস আগে দেশে ফিরেছেন মিথোন। দেশে ফেরার আগে পরিবার থেকে পছন্দ করে রাখা হয়েছে পাত্রী। ছেলের দেখে পছন্দ হলেই ঠিক হবে পাকা কথা। এমনকি শেষ হয়ে গেছে বিয়ের বাজারও। রোববার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে মেয়ে দেখতে গেছিলেন নড়াইলের লোহাগাড়ায়। পাত্রী পছন্দ হওয়ায় আগমী শুক্রবার বিয়ের তারিখও ঠিক করা হয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে একই এলাকায় বোনের রাড়ি রাত্রিযাপনের পর সোমবার বাড়ি ফিরছিলেন তারা। ফেরার পথে কালনা এলাকায় পৌঁছালে সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তারা । স্থানীয় এক মহিলা তাদের সড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করেন। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে একজনের এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে অন্যজনের মৃত্যু হয়।
নিহতের চাচা সোহরাব মাতুব্বর জানান, ছোট ভাই অন্তর যখন দুর্ঘটনার শিকার হন তখন তার জ্ঞান ছিল। বোনকেও ফোনে দুর্ঘটনার কথা জানায় সে । কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
দুই সন্তানকে একসাথে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা নিজামুদ্দিন। আর্তনাদ করে করে তিনি বলছেন, আমার ছেলের বিয়ের সবকিছু ঠিক, বিয়ের সবকিছু নিয়েও এসেছে। আমি এসব দিয়ে এখন কি করব?, আমার দুটি ছেলের একি হলো।
এলাকাবাসী জানান, তাদের দুই ভাইয়ের মত এত মিল তারা কোনদিন দেখেন নাই। দুই ভাইয়ের মধ্যে অসম্ভব মিল ছিল।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খাইরুল আনাম বলেন, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার মাজরা এলাকায়। বড় ভাই ঘটনাস্থলে মারা যান, ছোট ভাই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদের মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এরা নিজেরাই দুর্ঘটনার শিকার হন।
মন্তব্য করুন