সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ০২:২২ পিএম
আপডেট : ০৭ জুন ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যমুনায় বেড়েই চলেছে পানি, অরক্ষিত তীরে ভাঙন

সিরাজগঞ্জে যমুনার তীরে ভাঙন। ছবি : কালবেলা
সিরাজগঞ্জে যমুনার তীরে ভাঙন। ছবি : কালবেলা

প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বেড়েই চলেছে। গত চার-পাঁচ দিনে পানি বৃদ্ধির হার ছিল আশঙ্কাজনক। এদিকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অরক্ষিত তীরবর্তী অঞ্চল শাহজাদপুরে শুরু হয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছে ভাঙনকবলিতরা।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ২ জুন থেকে যমুনায় ব্যাপকহারে পানি বাড়ছে। শুক্রবার (৭ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৭৪ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সোমবার ৩০, মঙ্গলবার ৩৭, বুধবার ৫০ ও বৃহস্পতিবার ২৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়।

অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে শুক্রবার পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩২ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২ দশমিক ৪৮ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে সোমবার ৩১, মঙ্গলবার ৪৪, বুধবার ৪৪ ও বৃহস্পতিবার ২৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পায়।

এদিকে জেলার শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, খুকনী ও কৈজুরী ইউনিয়নে যমুনা অরক্ষিত তীরবর্তী অঞ্চলে কয়েক বছর ধরেই ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি ইউনিয়নের ৮-১০টি গ্রামের হাজার হাজার বাড়িঘর কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তাঁতশিল্প, রাস্তাঘাটসহ বহু স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। বাস্তুহারা ও নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিত হাজার হাজার মানুষ।

চলতি মৌসুমে যমুনার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপকহারে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে জালালপুরের গুচ্ছগ্রাম এলাকায় প্রায় দেড় শতাধিক বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের আতঙ্কে রয়েছে নদীতীরবর্তী মানুষ।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে ভাঙনরোধ করা না হলে আরও শত শত বাড়িঘর ও স্থাপনা নদীগর্ভে চলে যাবে। নিঃস্ব হয়ে পড়বে হাজারো মানুষ।

ভাঙনকবলিতরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শাহজাদপুরের জালালপুর ও কৈজুরী এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছে। অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। দীর্ঘ আন্দোলন ও প্রতিক্ষার পর সরকার এ অঞ্চলে ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির কাজ শুরু হলেও ঠিকাদার ও পাউবোর গাফিলতিতে দ্রুত কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না। ফলে আবারও ভাঙনের কবলে পড়েছে এসব অঞ্চল। গত তিনদিনের ব্যবধানে জালালপুর ও কৈজুরী ইউনিয়নের দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শাহজাদপুর উপজেলায় যমুনার ডানতীর সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে। সিসিব্লক ম্যানুফ্যাকচারিং প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মানুফ্যাকচারিং শেষ হলে স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ শুরু হবে। এই কাজের মেয়াদ ছিল জুন ২০২৪। আরও এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ায় খালেদা জিয়ার নির্বাচন পরিচালনায় ১১ সদস্যের কমিটি

নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে কোনো সংস্কারই বাস্তবায়ন সম্ভব নয় : ইশরাক 

আ.লীগ হিন্দু সম্প্রদায়ের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করেছে : আমান

তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছে : নজরুল ইসলাম

আন্দোলনরত ৮ দলের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত

নারীসহ দুজনকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও প্রচার, চাঁদা দাবি

পুলিশকে কামড়ে পালানো সেই ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

ভূমিকম্পে ঢাকায় কোন এলাকা নিরাপদ, ‘ব্লাইন্ড ফল্ট’ কোথায়

চার বছর পর ফিরল শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদ

ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা

১০

চাঁদপুরের বাণিজ্য সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

১১

পুলিশ আগে আমাকে গ্রেপ্তার করত, এখন স্যালুট দেয় : শাহজাহান চৌধুরী

১২

সমাধান ছাড়াই শেষ হলো ববি ও বিএম কলেজের আলোচনা

১৩

দেশে আর কোনো স্বৈরশাসকের জন্ম হবে না : সেলিমুজ্জামান

১৪

আটকে গেল ১৩ শিক্ষার্থীর জজ হওয়ার স্বপ্ন

১৫

যৌন হয়রানীর অভিযোগে মামলা করলেন শুটার রত্না

১৬

মাতৃমৃত্যুর ৫৫ শতাংশই হয় প্রসব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায়

১৭

মজলুম থেকে জালিম হইয়েন না : আসিফ মাহমুদ

১৮

ইসলামিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে : আমিনুল হক

১৯

বন্যা-ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াল শ্রীলঙ্কা দল

২০
X