উজানের ঢল আর ভারি বর্ষণে নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে একটি ইউনিয়নের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই শতাধিক পরিবার। এ ছাড়াও পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সহস্রাধিক বিঘা আবাদি জমি।
স্থানীরা জানান, উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এসময় বাঁধের অন্তত ২০০ মিটার অংশ বিধ্বস্ত হয়ে পানি প্রবেশ করে নিজ সুন্দরখাতা, মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা গ্রামের ১০টি মহল্লায়। এতে করে এসব গ্রামে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। পানিতে তলিয়ে গেছে ৩০০ একর আবাদী জমি। এসব জমির আমন বীজতলা, মরিচ ও পাটসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে।
নিজ সুন্দরখাতা গ্রামের গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের বুড়ি তিস্তা নদীর মূল বাঁধটি নির্মিত হয় ষাটের দশকে। এরপর থেকে আর সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল।
এরইমধ্যে উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার ভোরে বাঁধের ২০০ মিটার অংশ ভেঙে গিয়ে নিজ সুন্দরখাতা ও মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা গ্রামের ১০টি মহল্লায় প্লাবিত হয়। এতে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও পানিতে তলিয়ে গেছে ৩০০ একর আবাদী জমি। এসব জমির আমন বীজতলা, মরিচ ও পাটসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক পুরোনো ওই বাঁধটি শুধু সংস্কার করলেই হবে না। গ্রামতে একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল ক্ষেত, আবাদী জমি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের সুদৃষ্টি চাই আমরা গ্রামবাসী।
একই গ্রামের কৃষক কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘শুধু বাঁধ ভেঙেই নয়, নদীতে ঢলের পানি আসায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে গ্রামে। দ্রুত মেরামত করা না হলে পানি জমে থাকা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হবে না। আবাদ করতে না পারলে অনেক কৃষক পরিবার সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে’।
ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী জানান, বুড়ি তিস্তার নদীর বাঁধ ভেঙে নিজ সুন্দর খাতা গ্রামের প্রায় এক হাজার বিঘা আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে মাঠে থাকা আমন ধানের বীজতলা, পাট ও মরিচসহ অন্যান্য ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ চলছে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌমলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিনা সে বিষয়ে কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ভাঙা অংশসহ বাঁধ উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। এতে করে ৩০০ একর আবাদী জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিষটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙা অংশে পানির স্রোতে বেশি থাকায় মেরামত করা যাচ্ছে না এই মুর্হুতে। পানির স্রোত কমলেই বালির বস্তা ফেলে ভাঙা অংশ মেরামত কাজ শুরু হবে।’
মন্তব্য করুন