ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার সদর ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে দুপক্ষের সংঘর্ষে মারাত্মক জখমের শিকার আজিজার শেখ (৪৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজিজার শেখ মারা যান।
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. সেলিম রেজা আজিজার শেখের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার (১৯ জুন) রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাইরপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রিপন সরদার (৩০) নামে আহত আরও একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলার আলফাডাঙ্গা সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান একেএম আহাদুল হাসানের সমর্থক বারইপাড়া গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ঝুনু মিয়ার সঙ্গে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুলের সমর্থক একই গ্রামের ইকরাম মিয়ার মধ্যে গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-মামলার ঘটনা চলমান রয়েছে।
৪ বছর আগে হতাহতরা ইকরাম মিয়ার ওপর হামলা চালায়। সেই হামলায় ইকরাম মিয়া মারাত্মক আহত হয়। সেই বিরোধের জেরে গত বুধবার রাতে দুপক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য ঝুনু মিয়ার পক্ষের আজিজার শেখ ও রিপন সরদার নামে দুই ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ হামলায় নারীসহ দুপক্ষের আরও তিনজন আহত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থক গুরুতর আহত রিপন সরদারের বাবা বাদশা সরদার বলেন, ‘আমার ছেলে রিপন সরদার গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে বাড়ির সামনে পাকা সড়কের পাশে গল্প করছিল। ইকরাম মিয়ার ছেলেরা ও হাসেম ফকিরের ছেলেরা ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থক ইকরাম মিয়ার স্ত্রী জুলেখা বেগম জানান, ‘আমার স্বামী ও তিন ছেলে মহিষাগোপ যাওয়ার পথে রিপন সরদার ও আজিজার শেখরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমার ছেলে ইমরান আহত হয়ে কাশিয়ানী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এ ঘটনায় সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল জানান, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।
আলফাডাঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আজিজার শেখ নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। থানায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন