মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটররা গ্রেপ্তার করতে পারবেন-এমন ক্ষমতা দিয়ে ২০১০ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যপ্রণালী বিধিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে। এ সংশোধনীর মাধ্যমে তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি প্রসিকিউটরদেরকে ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা ছাড়াই সরাসরি আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এ সংশোধিত কার্যপ্রণালী বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, সদস্য এম মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ও মো. শফিউল আলম মাহমুদের আদেশে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার এ এস এম রুহুল ইমরান এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
২০১০ সালের কার্যপ্রণালী বিধিমালার ২৪টি বিধিতে সংশোধন আনা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি বিধি একেবারেই বিলুপ্ত এবং বাকি ১৯টি বিধি আংশিক বা পুরোপুরি বিলুপ্ত করে নতুন কার্যপ্রণালী বিধি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, বিধি ৬।
২০১০ সালের বিধি ৬ বিলুপ্ত করে প্রতিস্থাপন করা বিধি ৬-এ বলা হয়েছে, ‘যদি তদন্ত কর্মকর্তার বিশ্বাস করার কারণ থাকে যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তাহলে তিনি নিজে ঘটনাস্থলে যাবেন, মামলার তথ্য ও পরিস্থিতি তদন্ত করবেন এবং অভিযুক্ত সন্দেহভাজন বা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান করতে পারবেন।’
এই বিধিতে আরও বলা হয়েছে, ‘তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার, আবিষ্কার এবং জব্দ করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তাও চাইতে পারেন।’
একইভাবে আগের কার্যপ্রণালী বিধির ৯(১) বিধি বিলুপ্ত করে তা নতুনভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সংশোধিত ৯(১) বিধিতে বলা হয়েছে, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা তদন্তকারী কর্মকর্তা অথবা আইনের ৮(২) ধারার অধীনে তদন্তকারী প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করবেন।’
সংশোধিত বিধির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘আগের বিধি অনুযায়ী অভিযুক্ত, সন্দেভাজন ব্যক্তিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করতে পারতেন না। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে হতো। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন মঞ্জুর করে পরোয়ানা জারি করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেপ্তার করতে হতো। এখন তা করতে হবে না। ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেভাজন অভিযুক্তকে তদন্তকারী কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করতে পারবেন। পাশাপাশি পরোয়ানাভুক্ত অসামিকে এখন থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি তদন্ত সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউটররাও গ্রেপ্তার করতে পারবেন।’
এ ছাড়া সংশোধিত বিধিতে ‘অভিযুক্ত’ হিসেবে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনকেও রাখা হয়েছে। আর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে চিফ প্রসিকিউটরকে কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই প্রসিকিউটর। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ কার্যপ্রণালী বিধি-২০১০ (সংশোধিত) অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন