আতশবাজি ও ফানুস নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আইনি পদক্ষেপ ও কার্যকর ভূমিকা না নেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (২১ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
এর আগে আতশবাজি ও ফানুস নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ রফিকুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ রোবাইয়াত ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ সাতজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরিবেশবাদী ও প্রাণী অধিকারবিষয়ক কয়েকটি সংগঠনের রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনজীবী শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন আইনি বিধিনিষেধের মধ্যেও বিশেষ দিনে আতশবাজির প্রচলন আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ডিএমপির পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে ফানুস ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়। এ ছাড়া ‘বিস্ফোরক আইন, ১৮৮৪’ অনুসারে রঙিন আতশবাজি রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের জরিপ (ক্যাপস) অনুযায়ী ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে আতশবাজির জন্য শব্দদূষণ ১১৩ শতাংশ বেশি ছিল, বায়ুমান ছিল ৫০০ একিউআই পর্যন্ত, যা মানুষের সহ্যক্ষমতার তুলনায় ৯ গুণ বেশি। একই রাতে আতশবাজি ও ফানুস ওড়ানোর কারণে শত শত পাখি মারা যাওয়া এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে।
রোববার এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদালত আতশবাজি ও ফানুস নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আইনি পদক্ষেপ ও কার্যকরী ভূমিকা না নেওয়ায় হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত ১১ জানুয়ারি পরিবেশবাদী ও প্রাণী অধিকারবিষয়ক সংগঠন সেভ দ্য নেচার অব বাংলাদেশ, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং মানবাধিকার সংগঠন গণঅধিকার ফাউন্ডেশনের পক্ষে আতশবাজি ও ফানুস নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যথাযথ আইনি পদক্ষেপ ও কার্যকর ভূমিকা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে বিবাদী করা হয়।
মন্তব্য করুন