চালুর আগেই চুরি হয়ে হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ট্রমা সেন্টারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সম্প্রতি এসিসহ দামি জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে ট্রমা সেন্টারটির। নেই পাহারাদারও। সবসময় খোলা থাকে গেট।
নিরিবিলি স্থানে হওয়ায় মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা আরও জানান, আমরা বেশ কয়েকবার চুরি করার সরঞ্জামসহ চোরকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম পুলিশের কাছে। তবুও চুরির ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে।
মাদারীপুর শিবচর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশেই নির্মিত হয় এ ট্রমা সেন্টারটি। ২০২২ সালের নভেম্বরে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উদ্বোধন করলেও, এখনো চালু হয়নি স্থানীয়দের স্বপ্নের এ ট্রমা সেন্টারটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ট্রমা সেন্টারের নামকরণ করা হয় সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর পিতা সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর নামে। তবে নামে মাত্র তড়িঘড়ি করে উদ্বোধন হলেও ট্রমা সেন্টারের কার্যক্রম আজও চালু হয়নি। ট্রমা সেন্টারটি চালুর জন্য যে জনবলের প্রয়োজন, তার পদ সৃজন আদৌ করা হয়নি। যার ফলে অবকাঠামোগত নির্মাণ সম্পন্ন হলেও চালু হয়নি চিকিৎসাসেবা।
পদ্মাসেতু চালুর পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। মহাসড়কের শিবচর উপজেলার সন্যাসীরচর ইউনিয়নের দৌলতপুর নামক স্থানে ঝকঝকে একাধিক ভবন সংবলিত এ ট্রমা সেন্টারটি। বর্তমানে ট্রমা সেন্টারটি চালু হওয়ার সম্ভাবনাও দিনদিন পিছিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়, মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালকরা জানান, মহাসড়কের পাশে ট্রমা সেন্টার থাকা খুবই জরুরি। কিন্তু উদ্বোধনের পর আড়াই বছর পার হলেও চিকিৎসাসেবা চালু হবার সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি রীতিমতো মহামারি রূপ নিয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা গেলে প্রাণহানি অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই নির্মিত হয়েছিল মাদারীপুর জেলার শিবচরে ট্রমা সেন্টারটি। তবে সেবা না থাকায় কোনো কাজেই আসছে না ১২ কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত এ প্রতিষ্ঠানটি। পড়ে আছে বছরের পর বছর। রাষ্ট্রীয় সম্পদ তো অপচয় হচ্ছেই, জনগণও বঞ্চিত হচ্ছে এ সেবা থেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবীন কালবেলাকে জানান, ট্রমা সেন্টারটি সম্পূর্ণ সিভিল সার্জনের দায়িত্বে। তবে, আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে, দুই দুবার মেইন গেটে তালা লাগিয়েছিলাম। কিন্তু তালা ভেঙে চোর প্রবেশ করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এইচএম ইবনে মিজান কালবেলাকে জানান, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। তবে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সর্বাধিক চেষ্টা করব।
মন্তব্য করুন