পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হেনা মুরসালিন। পরে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। মুরসালিন সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পরীক্ষা শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় একাধিক ছাত্রলীগের কর্মী বাঁশের লাঠি দিয়ে তার উপর হামলা চালায়।
অভিযুক্তরা হলেন, গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হাসান, অ্যাকাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত ও সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ। তারা সকলেই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইনের অনুসারী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, মারধরের খবর পেয়ে আমি সহকারী প্রক্টরকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। সেখান থেকে ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কিনা সেটা পুলিশ যাচাই করে। কোনো মামলা না পাওয়ায় আমরা তাকে ছেড়ে দেওয়ায় সুপারিশ করি।
রাজনৈতিক কারণে কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে এভাবে মারধর করতে পারে কিনা তা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ ক্যাম্পাস সকলের। এভাবে কেউ কাউকে মারধর করতে পারে না। ওই শিক্ষার্থী যদি কোনো অভিযোগ করে তাহলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
সদরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই (উপপরিদর্শক) হাসান মাতবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমার কাছে বুঝিয়ে দেয়। আমি তাকে আমার হেফাজতে রেখেছি। কি করতে হবে প্রক্টর পরে সিদ্ধান্ত দিবেন।
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, ক্যাম্পাসে কোনো মারধর বা হামলার ঘটনা ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। শিক্ষার্থীদের অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের দায় ছাত্রলীগ নিবে না।
হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ‘পরীক্ষা দিতে এসে আমাদের কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কতিপয় ছাত্রলীগকর্মী দ্বারা আহত হলো। এর আগেও কয়েকজনকে পরীক্ষার হলে ঢুকে মারধর করে আহত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত হামলাকারীদের ধরে পুলিশে দেওয়া। তারা তো তা করেনি, উল্টো হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তারা বেআইনি এবং বিমাতাসূলভ আচরণ করেছেন। আমরা হমলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রাজিনা সুলতানা বলেন, মোরসালিন তার মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পরেই হামলার শিকার হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
এর আগে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান ও বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইমরান হাসান ইমনকে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এদিন গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম হাসানের নেতৃত্বে ইমরান হাসান ইমনের মারধর করে আইফোন ও মানিব্যাগ কেড়ে নেন। মোবাইল ফোন ফেরত চাইলে পুণরায় মাইরধরের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইমরান ইমন।
এ বিষয়ে প্রক্টর বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।
মন্তব্য করুন