কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই জাতের গাছ রোপণে নিষেধাজ্ঞা 

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের লোগো। ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের লোগো। ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আগ্রাসী প্রজাতির ইউক্যালিপটাস এবং আকাশমনি গাছের চারা রোপণ, উত্তোলন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবর্তে দেশীয় প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি চারা রোপণের নির্দেশ দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে ১৫ মে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকেও এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল।

অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ইউক্যালিপটাস গাছের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশি-বিদেশি গাছের পার্থক্য এবং তাদের উপকার-অপকার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব থাকায় দ্রুত কাঠের আশায় এই ক্ষতিকর বিদেশি গাছগুলো লাগানো হয়।

ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছের যেসব ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে-

ইউক্যালিপটাস গাছ প্রচুর অক্সিজেন শোষণ করে এবং নাইট্রোজেন ত্যাগ করে, যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। এটি প্রচুর ভূগর্ভস্থ পানি শোষণ করে আশপাশের জমির পানি শুষে নেয়, ফলে কৃষিজমির গুণাগুণ ও উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়। ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা ও ডালপালা পচতে দীর্ঘ সময় লাগে, যা মাটির জন্য ক্ষতিকর। এ গাছ অক্সিজেন শুষে নেওয়ায় আশপাশের অন্যান্য গাছের খাদ্য তৈরির স্বাভাবিক প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়। এমনকি এই গাছে পাখিও বসতে চায় না। ইউক্যালিপটাস গাছে অতিরিক্ত তেল থাকায় এটি অত্যন্ত দাহ্য এবং এর আবাসভূমি অস্ট্রেলিয়াতেও এটি ‘অগ্নি সৃষ্টিকারী’ হিসেবে পরিচিত।

১৯৬০-এর দশকের কাছাকাছি সময়ে ইউক্যালিপটাস গাছ বাংলাদেশে আনা হয় এবং সরকারি উদ্যোগেও সামাজিক বনায়নের আওতায় রোপণ করা হয়। এ গাছগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও কোনো ফল দেয় না, যা দেশীয় ফলজ গাছের বিপরীতে একটি বড় পার্থক্য।

২০০৮ সালে সরকার ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন ও বিপণন নিষিদ্ধ করলেও এর বাস্তবায়ন পুরোপুরি হয়নি। জীববৈচিত্র্য রক্ষা, প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ইউক্যালিপটাস গাছ রোপণ সম্পূর্ণ বন্ধ করা জরুরি। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশীয় গাছের পরিচিতি ও গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিদেশি নয়, দেশীয় গাছ লাগানোর ওপর জোর দিতে হবে। বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষা এবং পরিবেশ দূষণ রোধে দেশীয় গাছের বীজ সংরক্ষণ, উৎপাদন ও বিপণনে দেশের নার্সারিসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে নির্দেশনায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসুর রোডম্যাপ দাবিতে ৩২ ঘণ্টা ধরে অনশনে বিন ইয়ামিন

বই চুরির মামলায় অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার গ্রেপ্তার

বন্যা না আসতেই ধসে গেল নদী রক্ষা বাঁধ

বর্তমান পরিস্থিতিতে মির্জা গালিবের ৫ পরামর্শ

পাকিস্তানকে বিশাল বাঁধ নির্মাণ করে দিচ্ছে চীন

অর্ধশতাধিক বাড়িঘর বিলীন, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

‘কুমির ডেকে আনছেন তা আপনাদেরই খাবে’

ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় গ্রহণকারী ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান

চট্টগ্রাম রোটারেক্ট ক্লাবের সভাপতি রাহাত, সম্পাদক ফারহানুল

ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নেওয়া সেই ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করল সেনাবাহিনী

১০

ব্যাংকে ব্যাংকে পুলিশ পাঠিয়ে ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণ আর নয় : গভর্নর

১১

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে : খেলাফত মজলিস

১২

বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে আইসিসি

১৩

সহোদরের হাতে বড় ভাই খুন

১৪

পানি দেবেন না মোদি, কী করবে পাকিস্তান?

১৫

সামান্য বৃষ্টিতেই চট্টগ্রামে জলজট, ভোগান্তিতে নগরবাসী

১৬

এক ঘণ্টার চার্জে দুই দিন চলে যে স্মার্টফোন

১৭

শাপলা চত্বরের শহীদদের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে: মামুনুল হক

১৮

মানবিক করিডোর নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি : উপপ্রেস সচিব আজাদ

১৯

কোরবানি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া ডেপুটি হাইকমিশনারকে ঢাকায় বদলি

২০
X