যবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ডিগ্রি নিতে বৃক্ষরোপণ বাধ্যতামূলক দেশের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের করিডোর। ছবি : কালবেলা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের করিডোর। ছবি : কালবেলা

স্নাতক ডিগ্রি পেতে বাধ্যতামূলক ন্যূনতম পাঁচটি বৃক্ষরোপণের নিয়ম করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কলা ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদ।

এ অনুষদের অধীনে একমাত্র বিভাগ ইংরেজি বিভাগের আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনের জন্য এখন থেকে বাধ্যতামূলকভাবে এ বৃক্ষরোপণ করতে হবে। গত ৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ৫৩তম সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

এর জন্য কোনো ক্রেডিট বা নম্বর বরাদ্দ না থাকলেও, বিভাগ থেকে এ বিষয়ে ছাড়পত্র প্রেরণ না করলে কোনো শিক্ষার্থী তার সনদ উত্তোলন করতে পারবে না।

ফলে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সের অধীনে বাধ্যতামূলকভাবে পাঁচটি গাছ লাগাতে হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে, রাস্তার ধারে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা যে কোনো উপযুক্ত জায়গায় প্রতি বছর কমপক্ষে ২০০ বৃক্ষরোপণ করবে।

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, কয়েক বছর ধরে বিরূপ আবহওয়ার প্রাদুর্ভাব, তীব্র দাবদাহ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, পরিবেশগত দূষণ এবং বিপর্যয় প্রশমনের অংশ হিসেবে যবিপ্রবির ইংরেজি বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটি অনুষদীয় সভার মাধ্যমে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে প্রেরণ যা পরবর্তীতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণ ফোরাম, রিজেন্ট বোর্ডের ৯৪তম সভায় ও অনুমোদিত হয়।

এ বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং কলা ও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মো. মুনিবুর রহমান বলেন, আমরা সবাই ধরিত্রী মাতার সন্তান। অথচ এ সর্বংসহা ধরিত্রীকে আমরা নানাভাবে লুণ্ঠন করেছি, বাস্তুতন্ত্র বিপর্যস্ত করেছি এবং পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছি। ভবিষ্যতে মানবসভ্যতাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই পৃথিবীকে সারিয়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। যদি পৃথিবী বাসযোগ্যই না থাকে, তাহলে আমাদের সব জ্ঞান ও অর্জন কোনো কাজেই আসবে না। কিন্তু, শুধু ইংরেজি বিভাগের এ উদ্যোগ গোটা দেশের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আনবে না। তবে, আমরা বিশ্বাস করি, ধরিত্রী মাতাকে সারিয়ে তোলার তাগিদে যবিপ্রবির অন্যান্য বিভাগসহ বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক দিন এগিয়ে আসবে; ধরিত্রী মাতা আবার সবুজ-শ্যামলিমায় সুন্দরী ও বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।

তিনি আরও বলেন, যদি কোনো শিক্ষার্থী অর্থাভাবে পাঁচটি বৃক্ষের চারা ক্রয় করতে না পারে, তাহলে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুদানে পরিচালিত কল্যাণ তহবিল থেকে সাহায্য করা হবে।

এ প্রসঙ্গে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু জ্ঞান-বিজ্ঞানের দ্বারই উন্মোচন করে না, তাদের সমাজ ও দেশের একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। ইংরেজি বিভাগের এ সিদ্ধান্তটি সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিপালন এবং পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। শুধু বৃক্ষরোপণ নয়, আরও সমাজসেবামূলক কাজে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। আমার অনুরোধ থাকবে, আগামীতে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি সাক্ষরতা অভিযান, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ যেন সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমার বিশ্বাস, আগামীতে যবিপ্রবির এ দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সব প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে। একটি নিরাপদ, বাসযোগ্য, সুস্থ ও সুন্দর পৃথিবী গড়তে বৃক্ষ রোপণের কোনো বিকল্প নেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নকল সরবরাহ করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আটক

এইচএসসির তৃতীয় দিনে অনুপস্থিত ২৪৮৯১ জন 

ক্ষমতাকেন্দ্রিক নয়, সংস্কারের পক্ষে জোট চায় এবি পার্টি

ব্রিটিশদের নাকানিচুবানি দিতে ১০ বছর ধরে যে রণকৌশলে এগোচ্ছে ইরান

বাসযাত্রীর ব্যাগে মিলল বিপুল ইয়াবা, অতঃপর...

কুয়েট ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির জন্য ৬৮ অধ্যাপকের আবেদন

ইতিহাস গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর, কনটেইনার পরিবহনে রেকর্ড

৭০০ টাকার ব্রডব্যান্ড ৫০০ টাকায় দেওয়ার নির্দেশনা আইএসপিএবির

কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে রূপসা সেতুর টোল প্লাজা অবরোধ 

অসচ্ছল নারী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ঢাবি

১০

ক্ষোভের মুখে সরানো হলো বিএনপির অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এহসানকে

১১

নগর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সরাসরি পরিচালনা করবে ডিএনসিসি

১২

সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর নারকীয় হামলার প্রতিবাদ, থানায় মামলা

১৩

কুষ্টিয়ায় কাফনের কাপড় জড়িয়ে বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও

১৪

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যে জুলকারনাইনের প্রতিক্রিয়া

১৫

দুই দশক পর কারামুক্তি, সঙ্গে লাখ টাকা সঞ্চয় দুই নারীর

১৬

এবার ইরাকের বিমানবন্দরে রকেট হামলা

১৭

মায়ের কোল ফিরে পেল ৬০ হাজারে বিক্রি হওয়া শিশুটি

১৮

গুম কমিশনের প্রতিবেদনে নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র

১৯

ট্রাম্পকে বিদায় করতে আয়োজন করে নামছেন মাস্ক!

২০
X