বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গত দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে স্বাস্থ্য প্রতিষেধক শাখার ডেন্টাল বিভাগ। নেই ডেন্টাল বিভাগের কোনো ডাক্তার। এদিকে বিভাগটি বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকায় কেনা ডেন্টাল চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি। অপচয় হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদের। অন্যদিকে ডেন্টাল বিভাগটি বন্ধ থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ময়মনসিংহ মেডিকেলে সেবা নিতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
এদিকে দীর্ঘ বন্ধ ও নিয়মিত ডাক্তার না থাকায় ডেন্টাল বিভাগকে ভুলতে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হেলথ কেয়ারের ডেন্টাল বিভাগে সর্বশেষ ডাক্তার ছিলেন ১২ বছর আগে। তিনি খণ্ডকালীন নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি হেলথ কেয়ার থেকে ২০১১ সালে চলে যাওয়ার পর ১২ বছর ধরে কোনো ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়নি বিভাগটির জন্য। বিভাগটি তখনও বন্ধ হয়নি। নিয়োগ ছাড়াই গত ১০ বছর একজন টেকনোলোজিস্ট কাজ করত ডেন্টাল বিভাগে। তিনিও এখন আর সেখানে কাজ করেন না। কাজ করেন অন্য বিভাগে। তাই এখন পুরো বিভাগটিই বন্ধ হয়ে রয়েছে। তৎকালীন বাজারমূল্যের প্রায় তিন লাখ টাকার ডেন্টাল চিকিৎসায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিগুলো এখন নষ্ট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো আশিকুজ্জামান বলেন, আমি দাঁতের ব্যথার চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হেলথ কেয়ারে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পরে দেখি ডেন্টাল বিভাগ তালাবদ্ধ। হেলথ কেয়ারের কর্মরত ফার্মাসিস্ট ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ ও ডাক্তার না থাকার কথা জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে হেলথ কেয়ার থাকা সত্ত্বেও আমাকে ভোগান্তি পেরিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো সাঈদুর রহমান বলেন, পদ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার নিয়োগ হয়নি। অনেকদিন আগে একজন ডেন্টিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো খণ্ডকালীন হিসেবে। তিনি হেলথ কেয়ার থেকে চলে যাওয়ার পর আর কোনো ডেন্টিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। একজন টেকনোলোজিস্ট কাজ করত ডেন্টাল বিভাগে। তবে দীর্ঘদিন ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ রয়েছে। আমরা নতুন ডাক্তার নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি। একজন ডেন্টিস্ট নিয়োগ দেওয়া হলে পুনরায় ডেন্টাল ইউনিট চালু হবে। হেলথ কেয়ারের ডেন্টাল ইউনিটের যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে সেগুলো নষ্ট। ডেন্টিস্ট নিয়োগ দেওয়ার পরে প্রয়োজন অনুযায়ী ডেন্টিস্ট যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ব্যবস্থা করবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ডেন্টাল ইউনিট বন্ধের বিষয়ে হেলথ কেয়ার থেকে আমাদের জানায়নি। একজন টেকনোলোজিস্ট ডেন্টাল বিভাগ চালু রাখতো। দীর্ঘদিন ডেন্টাল ইউনিট বন্ধ থাকায় ডেন্টাল সামগ্রী নষ্ট হওয়ার কথা। অনেক আগেই ডাক্তার নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়েছিল। ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হলে ডেন্টাল ইউনিট চালু হবে।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, আমি হেলথ কেয়ারের বিষয়ে জেনেছি। যারা চিকিৎসক ছিলেন তার অবসরে গেছেন। নতুন চিকিৎসক নিয়োগ এবং ডেন্টাল ইউনিট পুনরায় চালুর বিষয়ে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করা হবে।
মন্তব্য করুন